নকশা জালিয়াতি: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের জামিন

বনানীর এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির মামলায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কে এ এম হারুনকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2019, 09:44 AM
Updated : 16 July 2019, 09:44 AM

এছাড়া এ মামলায় রাজউকের সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী ও সহকারী অনুমোদনকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শফিক আহমেদ ও এ এম আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গেলেনা বেগম চায়না।

দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কে এ হারুনকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তাকে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া রাজউকের বাকি দুই কর্মকর্তা মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী ও মো. নজরুল ইসলামের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তাদের ওই আদালতেই আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন।”

নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে এফআর টাওয়ারকে ১৬তলা থেকে ২৩তলা করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিক, রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ২৬ জুন দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন।

এফআর টাওয়ারের মালিক এস এম এইচ আই ফারুক, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল, এফ আর টাওয়ার ওনার্স সোসাইটির সভাপতি কাসেম ড্রাইসেলের এমডি তাসভীর-উল- ইসলামের নাম রয়েছে এ মামলার আসামির তালিকায়। তাসভীরের কোম্পানি ওই ভবনের ২১, ২২ ও ২৩ তলার মালিক।

রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কে এ এম হারুন, সাবেক সদস্য মো. রেজাউল করিম তরফদার, সাবেক পরিচালক মো. শামসুল আলম, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক মো. মোফাজ্জল হোসেন,সহকারী পরিচালক শাহ মো. সদরুল আলম, সাবেক প্রধান ইমারত পরিদর্শক মো. মাহবুব হোসেন সরকার, সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকি, সহকারী অথোরাইজড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক জাহানারা বেগম, সহকারী পরিচালক মেহেদউজ্জামান, নিন্মমান সহকারী মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা ও অফিস সহকারী মো. এনামুল হককেও আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।

এছাড়া বিসিএসআইআরের সদস্য (অর্থ) মুহাম্মদ শওকত আলী, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল্লাহ আল বাকি, গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ নাজমুল হুদা এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামছুর রহমানও এ মামলার আসামি।

ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারের ১৯ থেকে ২৩তলা নির্মাণ, বন্ধক প্রদান ও বিক্রি করার অভিযোগে দণ্ডবিধির সাতটি ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয় মামলায়।

এই মামলায় জামিনের আবেদন করেছিলেন আসামিরা।

গত ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে।