বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার আবেদনটি শুনে উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে।
আদালত বলেছে, “নুসরাত জাহান রাফিকে নিরাপত্তা দিলে এ ধরনের ঘটনা হয়ত এড়ানো যেত। তার (পরিদর্শক মোয়াজ্জেমের) উচিৎ ছিল তাকে (নুসরাত) নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্ত ক্ষমতা থাকার পরও তা না করে ওই ছাত্রীর বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করে তা ইন্টারনেট মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এ কাজ করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।”
দায়িত্ব বা ক্ষমতা থাকার পরও সে দায়িত্ব পালন না করার কারণে যদি কোনো দুর্ঘটনা বা অপরাধ ঘটে তবে সেজন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিও ‘সমান দায়ী’ বলে মন্তব্য করেন বিচারক।
আদালতে মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও সালমা সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরে আহসান উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “বুধবার সাইবার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের শুনানি আছে। সেখানে আমরা জামিন আবেদন করব। যদি ওইখানে আবেদনটি নামঞ্জুর হয়, তবে হাই কোর্টের অন্য কোনো বেঞ্চে আবার জামিন আবেদন করা হবে।”
সোনাগাজীর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা করার পর নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনার আগে রাফি থানায় গিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যে জবানবন্দি দিয়েছিলেন তা মোবাইলে ভিডিও করে প্রচার করেছিলেন সোনাগাজীর তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম।
এ ঘটনায় ঢাকার আদালতে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন একজন আইনজীবী।
সেই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে বেশ কিছুদিন লাপাত্তা থাকার পর গত ১৬ জুন আগাম জামিনের জন্য গোপনে হাই কোর্টে যান পুলিশ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম।
হাই কোর্টের এই বেঞ্চ সেদিন বিষয়টি শুনানির জন্য পরদিন সময় রাখে। কিন্তু ওই দিনই সুপ্রিম কোর্ট এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালে হাজির করা হলে বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেনের জমিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে এসেও জামিনের পক্ষে সায় পেলেন না মোয়াজ্জেমের আইনজীবীরা।