ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পূর্ব) মো. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, শনিবার রাতে হারুন উর রশিদ (২৬) নামের ওই যুবককে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হারুনের বাড়ি কুমিল্লায়। ওয়ারীর বনগ্রামের যে বহুতল ভবনে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে, তার অষ্টম তলায় খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় থাকতেন তিনি। ঠাঁটারীবাজারে পারভেজের রঙের দোকানেই তিনি কাজ করতেন।
আর হত্যার শিকার সাত বছর বয়সী মেয়েটি ষষ্ঠ তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকত। অন্য দিনের মতই আট তলায় পারভেজের মেয়ের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার কথা বলে শুক্রবার বাসা থেকে বের হয়েছিল সে।
কিন্তু সে না ফেরায় পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। নবম তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে তাকে পাওয়া যায় গলায় রশি প্যাঁচানো, মুখ বাঁধা ও রক্তাক্ত অবস্থায়।
শনিবার ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, “মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় এবং পরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।”
ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকালে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় শিশুটিকে।
হারুনকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের পর রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে হারুন ধর্ষণ ও হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।”
মেয়েটির বাবা নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। গত ফেব্রুয়ারিতে ওই ভবনে পরিবার নিয়ে সেখানে ওঠেন তিনি। তার দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট মেয়েটি একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত।
পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি আমার শিশুকে রক্ষা করতে পারিনি। আপনারা দয়া করে আপনার শিশুকে এই ধরনের কুরুচিপূর্ণ পশুদের থেকে দূরে রাখবেন।”
তার কথা শুনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখও ভিজে আসে।
তিনি বলেন, মেয়েকে হারিয়ে তার মা এক গ্লাস পানিও খাচ্ছেন না। মেয়ের বই কাপড়-চোপড় দেখে বার বার শুধু কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মেয়েটির বাবা বলেন, “আমি আপনাদের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমার মেয়ের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাই।”