ওয়ারীর শিশুটিকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়

পুরান ঢাকার ওয়ারীতে বহুতল ভবনের ফাঁকা ফ্ল্যাটে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটিকে আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2019, 08:39 AM
Updated : 6 July 2019, 06:03 PM

শনিবার সকালে নিহত শিশুটির ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় এবং এরপর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।”

ওয়ারীর বনগ্রামে বহুতল একটি ভবনের নয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে শুক্রবার রাতে সাত বছর বয়সী শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় শিশুটি পরিবারের সঙ্গে থাকত।

শিশুটির বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ওই মেয়েটি একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত।

সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিল শিশুটি; খোঁজাখুঁজির পর রাতে পাওয়া যায় লাশ। তখন খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নুরুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সন্ধ্যায় ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটি তার মাকে বলেছিল, সে উপরে পাশের ফ্ল্যাটের যাচ্ছে একটু খেলতে। সে প্রতিদিন বিকালে নিচে ও ভবনের উপরের ফ্ল্যাটে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে যেত।

“কিন্তু এদিন গিয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে ৯ তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে গলায় রশি দিয়ে মুখ বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় পরিবার।”

শিশুটির মুখে রক্ত ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে।

এই শিশু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৬ জনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা নুরুল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নুরুল আমিন জানিয়েছেন।

আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি জানিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার পর থেকে যে ৬ জনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এখনও তারা থানায় রয়েছে।”

নিহত শিশুটির বাবা আব্দুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে ছয় তলার ফ্ল্যাটে ওঠেন তারা। ফ্ল্যাটটি তিনি কিনেছিলেন।

পাশের ফ্ল্যাটের দুটি শিশু ছাড়াও উপরের ফ্ল্যাটের একটি শিশু রয়েছে, যার সঙ্গে তার মেয়ে খেলাধুলা করত।

কাউকে সন্দেহ হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তা পুলিশ তদন্ত করে বের করবে কে জঘন্য কাজটি করেছে।”

পুলিশ ভবনের দারোয়ান ফরিদ মিয়া এবং তার ছেলে নেয়ামতুল্লাহসহ আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানান তিনি।

ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে মেয়েটিকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।