ডালিয়ান থেকে বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী

চীনের ডালিয়ানে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের গ্রীষ্মকালীন সভায় অংশ নেওয়ার পর বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রিয়াজুল বাশার বেইজিং থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2019, 05:06 AM
Updated : 4 July 2019, 04:15 AM

এয়ার চায়নার একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার পর বেইজিং পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীরা।

চীনের ভাইস ফরেন মিনিস্টার চিং গ্যাং বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান। একটি শিশু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয় স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার।

বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক হবে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের।

তার এই সফরে চীনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এবার চীনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বাণিজ্য-বিনিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশের তরফ থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানের বিষয়টিতে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর আগে জানিয়েছিলেন।

বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা করে দিয়ায়োতাই স্টেট গেস্ট হাইজে নিয়ে যাওয়া হয়। চীনের রাজধানীতে সফরকালে তিনি সেখানেই থাকবেন।

বিকালে বেইজিংয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া একটি নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।  গ্রেট হল অব দি পিপলে চীনা বীরদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

বৃহস্পতিবারই চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। গ্রেট হল অব দি পিপলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তারা।

পরে সেখানে চীনের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভোজসভায় অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। বিকালে সিসিপিআইটিতে চীনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেবেন।

৫ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রী চীনা গবেষণা সংস্থা ‘পাঙ্গোয়াল ইনস্টিটিউশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এছাড়া চীনের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহীরাও শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের চেয়ারম্যান লি জান শুর সঙ্গেও বৈঠক হবে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিতে শি চিন পিংয়ের পর দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে তাকেই বিবেচনা হয়।

বিকালে দিয়াওইয়ুতাই রাষ্ট্রীয় অতিথিশালায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হবে। পরে তিনি চীনা প্রেসিডেন্টের দেওয়া ভোজসভাতেও অংশ নেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এসব প্রকল্পে মোট কত টাকা ঋণ নেওয়া হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

চুক্তিগুলো ও সমঝোতাগুলো হল

>> ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করতে ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট।

>> ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করতে গভার্নমেন্ট কনসেশনাল লোন এগ্রিমেন্ট।

>> ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করতে  প্রেফারেনশিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট লোন এগ্রিমেন্ট।

>> পিজিসিবি প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ গ্রিড নেটওয়ার্ক জোরদার প্রকল্পের জন্য ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট।

>> বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে অর্থনীতি ও কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি।

>> ইনভেস্টমেন্ট কোঅপারেশন ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা নিয়ে সমঝোতা স্মারক।

>> ইয়ালু ঝাংবো ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক ও তা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা।

>> সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পর্যটন কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা স্মারক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম চীন সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।

সফর শেষে ৬ জুলাই দেশে ফেরার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।