বরগুনার কাউকে আড়াল করার চেষ্টা নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন বন্ডের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর কাউকে আড়াল করার চেষ্টা নয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2019, 01:58 PM
Updated : 2 July 2019, 03:31 PM

মঙ্গলবার ভোরে বরগুনায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নয়ন নিহত হওয়ার পর সকালে ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে 'শতবর্ষের পথে বঙ্গবন্ধু ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।

গত ২৬ মার্চ বরগুনা শহরে প্রকাশ্যে সড়কে স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় যুবক রিফাতকে। ওই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।

রিফাতের স্ত্রীর বর্ণনায় নাম আসা প্রধান তিন হামলাকারীকে কয়েক দিনেও গ্রেপ্তার করতে না পারার সমালোচনা চলছিল। এরমধ্যেই সোমবার সকালে পুলিশ প্রধান আসামি নয়নের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার খবর দেয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, আমরা সবাইকে ধরে ফেলব এবং ধরার শেষ মুহূর্তে এ (নয়ন বন্ড) শুধু পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। আমি যতটুকু শুনেছি, পালিয়ে বেড়াচ্ছিল আর অবস্থান পরিবর্তন করছিল।”

তাকে জীবিত ধরার সুযোগ কি ছিল না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত গুলিবিনিময় কেন করতে হয়েছিল, এটা না জেনে আমি বলতে পারব না।

“নিশ্চয়ই সে (নয়ন) অস্ত্র দেখিয়েছিল অথবা অথবা গুলি.... নিজেকে আড়াল করার জন্য প্রচেষ্টা নিয়েছিল। সেজন্য পুলিশ নিরাপত্তার জন্য এবং পুলিশের নিজেরা নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য হয়ত এটা (বন্দুকযুদ্ধ) করেছে।”

বরগুনা পুলিশ দাবি করেছে, নয়নের পালিয়ে থাকার  খবর পেয়ে বরগুনার বুড়ির চর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়ির চর গ্রামের পায়রা নদীর তীরে অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। নয়নের সহযোগীরা পুলিশের দিকে গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।

এরপর নয়নের সহযোগীরা পালিয়ে গেলে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি গুলি এবং তিনটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

নয়নের পাশাপাশি রিফাত ফরাজী ও নিশান ফরাজী নামে দুই ভাইকেও খুনি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন নিহত রিফাতের স্ত্রী।

ফরাজীরা দুই ভাই বরগুনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের আত্মীয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলের বিরুদ্ধে নয়নকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নয়নের কথিত বন্দুকযুদ্ধে মৃত্যু প্রভাবশালীদের আড়াল করার উদ্দেশ্যে বলে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা উঠেছে।

এই বিষয়ে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “আমরা সব কয়টাকে ধরছি। প্রভাবশালী যারা থাকবে, আমরা সব কয়টাকে বের করব। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন, কোনো প্রভাবশালী এমনকি নির্বাচনী (জন) প্রতিনিধিকে ক্ষমা করছি না।
“কোনো প্রভাবশালী কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা কোনো নেতা, এটা আমাদের কাছে কোনো অন্তরায় নয়। যে অন্যায় করবে, সে আইনের মুখোমুখি হবেন।”

অন্য আসামিদের ধরার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা নিশ্চিত থাকুন, কারা এর পেছনে ছিল … আপনারা আরও কিছু জানতে পারবেন, আরও কিছু ইনকোয়ারি করে, তদন্ত করে সব আপনারা (সাংবাদিক) জানতে পারবেন।”