বরগুনার খুনিদের ধরতে ‘সিরিয়াসলি’ অভিযান চলছে: কাদের

বরগুনার রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার প্রধান আসামিরা পাঁচ দিনেও গ্রেপ্তার না হওয়ার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের ধরতে ‘সিরিয়াসলি’ অভিযান চলছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2019, 03:35 PM
Updated : 1 July 2019, 03:35 PM

সোমবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম এবং সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।

গত ২৬ জুন বরগুনা শহরে প্রকাশ্যে সড়কে স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে, যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশে সমালোচনার ঝড় নামে।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হিসেবে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর নাম এলেও তাদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরও প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারা এবং হত্যায় জড়িতদের সরকারি দলের প্রশ্রয় পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। এর অর্থ হচ্ছে, দেশের যিনি সরকার প্রধান, তিনি এক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতায় রয়েছেন।

“আজ অবধি সেখানে ৯ জনের মতো গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমার বিশ্বাস, বাকিরাও অচিরেই গ্রেপ্তার হয়ে যাবে। গ্রেপ্তারের জন্য সিরিয়াসলি অভিযান চলছে।”

এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত তারা যদি সরকারি দলেরও কেউ হন, রেহাই পাবেন না বলে আশ্বাস দেন কাদের।

তিনি বলেন, “এটা পুলিশকে জানানো হয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সরকারের মনোভাব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে খুন করে, যে খুনকে উৎসাহিত করে, মদদ দেয়, সেও তো অপরাধী।”

এই প্রসঙ্গে সোনাগাজীতে নুসরাত জাহান রাফি হত্যামামলায় আওয়ামী লীগের কয়েক নেতার গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টিও সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন দলটির সাধারণ সম্পাদক কাদের।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে ‘অস্বস্তি আছে’

গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে ‘অস্বস্তি’ বোধ করার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “দেখুন, কিছুটা অস্বস্তির বিষয় তো অবশ্যই আছে।

“তবে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের এবং এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের যে বক্তব্য, সেটা হচ্ছে আগে এলএনজি আমদানি প্রতি ইউনিট গ্যাসের মূল্য ৭ টাকা ৮০ পয়সা ছিল, বিক্রয়মূল্য ৭ টাকা ১৭ পয়সা। এই হিসাবে প্রতি বছর লোকসান প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

“বর্তমানে প্রতি ইউনিট এলএনজি আমদানি মূল্য ৩৯ টাকা, ব্র্যান্ডিংমূল্য ১২ টাকা ৫০ পয়সা। এই হিসাবে মাসে এক হাজার ৮৬০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এখানে মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল, সেটাই করা হয়েছে। আমি যতটুকু জেনেছি এই মূল্য সমন্বয়ের পরও সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে।”

গ্যাসের দাম বাড়ানো কি ‘জনবান্ধব’ মনে করছেন- এক সাংবাদিকের প্রশ্নে কাদের বলেন, “জনবান্ধবের জন্য তো দাম বৃদ্ধি হয়নি। এটা প্রাইস সমন্বয়। দেশ তো চালাতে হবে। গ্যাসের সংকট আছে, এটা বাস্তবতা। অস্বীকার করার তো উপায় নেই।”

নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের বিষয়ে কাদের বলেন, “কিছু দিনের মধ্যেই দিয়ে দেব। এটা ঝুলিয়ে রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই।“

নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন জুলাই মাসের মধ্যে সম্ভব কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সম্ভব।”

মন্ত্রিসভার রদবদল ‘গুঞ্জন-গুজবের পর্যায়ে’

মন্ত্রিসভার রদবদলের সংবাদ গণমাধ্যমে আসছে- এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কোথা থেকে নিউজ পেলেন? আমি জেনারেল সেক্রেটারি, আমি জানি না।

“স্পেকুলেশন আর বাস্তবতার মধ্যে একটা পার্থক্য থাকতেই পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কিছুই হতে পারে। এটা এখনও গুঞ্জন-গুজবের পর্যায়ে আছে। প্রাইম মিনিস্টার তো আজকে দেশের বাইরে যাচ্ছেন। কিছু হলে সেটা অবশ্যই… জেনারেল সেক্রেটারি অব দ্য পার্টি, আমি জানি না। সে ধরনের কিছু এখনও আমি জানি না।” 

তবে মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার জানিয়ে কাদের বলেন, “আমার মনে হয় কিছু কিছু পদ-পদবি এখনও খালি আছে। কাজেই এখানে রিশাফলিংয়ের চেয়ে এক্সপাংশনের বিষয়টা আছে। এক্সপান্ড হতে পারে।”

তিনি বলেন, “ছয় মাসে তো একজনের কর্মকাণ্ড-পারফরমেন্সের মূল্যায়ন করা যায় না। অন্তত এক বছর, দেড় বছর, দু’বছর যাওয়ার আগে… এসব বিষয়গুলো এখন আছে। এখন এক্সপাংশন হবে। হয়ত কারও দপ্তর পরিবর্তন হবে। এমন হয়ে গেছে, মাইনর একটা চেঞ্জ হয়েছে।”

শিগগিরই তা হচ্ছে কি না- প্রশ্নে কাদের বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চীন থেকে ফিরে এলে তখন এটা জানব। আমার মনে হয় না খুব সহসাই হচ্ছে।”