ওসি মোয়াজ্জেমের প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা: বিধি মেনে ব্যবস্থার নির্দেশ

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার ফেনীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে কারাগারে বিশেষ সুবিধা (ডিভিশন) দেওয়ার বিষয়ে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2019, 12:07 PM
Updated : 24 June 2019, 01:11 PM

আসামির ডিভিশন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস্‌সামছ জগলুল হোসেন সোমবার কারা তত্ত্বাবধায়কের প্রতি এ নির্দেশ দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা মোয়াজ্জেমের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী ফারুক আহমেদ।

আদেশের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী থানার ওসি প্রথম শ্রেণির কর্মর্কতা। সে কারণে তিনি ডিভিশন পাবেন।

জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বরখাস্ত। তিনি ডিভিশন পেতে পারেন না।

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের যৌন হয়রানির শিকার নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ওই মামলা করেন।

ওই মামলায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর ১৬ জুন হাই কোর্ট এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ লাপাত্তা থাকার পর আগাম জামিন চাইতে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তিনি।

পরদিন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেসঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতিবেদনকে অভিযোগপত্র হিসেবে নিয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ৩০ জুন দিন ঠিক করে দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় দায়ের করা এ মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে পুলিশ পরিদর্শক মোয়াজ্জেমের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত গত মার্চ মাসে তার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলে ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন।

তার কয়েক দিনের মাথায় নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে সারাদেশে আলোচনা শুরুর হয়। তখন ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হলে গত ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন আইনজীবী সুমন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, মোয়াজ্জেম বেআইনিভাবে মোবাইল ফোনে নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও করেছেন এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছেন। 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানালে বিচারক ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।