প্রশ্নফাঁসের অভিযোগপত্রে আসামি ১২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এবং বিসিএস ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2019, 02:35 PM
Updated : 23 June 2019, 02:35 PM

প্রায় দেড় বছর তদন্তের পর রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ অভিযোপত্র জমা পড়ে বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজাম উদ্দীন জানান।

তিনি বলেন, অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৬৯ জনকে সাক্ষী করা হযেছে। ১২৫ আসামির মধ্যে ৪৭ জন জামিনে রয়েছেন, বাকি ৭৮ জন পলাতক।

সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজি মোহা. শফিকুল ইসলাম গত ৩০ মে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ১২৫ আসামির মধ্যে ৮৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৪৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

তাদের কাছ থেকে এটিএম কার্ডের মতো দেখতে ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়, যা দিয়ে পরীক্ষা চলাকালে কানে আরেকটি ডিভাইস রাখা পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছিল।

ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারা এবং ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনের ৯ (খ) ধারায় মামলা করে সিআইডি। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি প্রধান শফিকুল ইসলাম গত ৩০ মে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল তদন্তের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াত চক্রকে চিহ্নিত করে।

“ওই চক্রের মাস্টারমাইন্ড মূলত দুইজন; নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী ও বিকেএসপির সহকারি পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস।”

ওই চক্র দুইভাবে পরীক্ষায় অসদুপায়ে জড়িত ছিল জানিয়ে অতিরিক্ত আইজি সেদিন বলেন, “একটি চক্র প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তা চড়া দামে বিক্রি করত। অন্যটি ক্ষুদ্র ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্নপত্র বাইরে পাঠানো ও ভেতরে পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দেওয়ার কাজ করত।

“যে চক্রটি ছাপানো প্রশ্ন ফাঁস করেছিল, তারা মূলত এ প্রশ্ন দিয়ে সাভারের একটি বাসায় খুব অল্প সময়ে কোচিং করিয়েছিল। এখানে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করে দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকাও নিয়েছিল। এর হোতা ছিল ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।”

ওই চক্রের হোতাদের প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়ার পর উত্তরা পশ্চিম থানায় মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করেছে সিআইডি।