বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
মেনন বলেন, “নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনার কাজটি আমাদের করতে হবে। কারণ রোগ এখন উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। পাঁচ দফা উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দলের অভিজ্ঞতা, এমনকি আওয়ামী লীগ নিজ দলের প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা করুণ। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বলেও কোন লাভ হচ্ছে না। বরং তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
“এর ফলে নির্বাচন ও সামগ্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে জনগণ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এটা নির্বাচনের জন্য কেবল নয়, গণতন্ত্রের জন্য বিপদজনক।”
“প্রধানমন্ত্রী ১৪ দলের শরিকদের নিজ পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকলে কেউ সংগঠন, আন্দোলন, ভোট নিয়ে এগুতে পারে না।”
বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বলেন, ঋণখেলাপির দায়ে ব্যাংকগুলো ন্যুব্জ। চলছে তারল্য সংকট। করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঘাটতি মূলধন পূরণ করার জন্য বরাদ্দ এবারেও রাখা হয়েছে বাজেটে।
“কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন ভূমিকা দূরে থাক, ব্যাংকগুলোকে কার্যকর নজরদারি করতেও অক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। নিজের অর্থই তারা সামাল দিতে পারেনি এবং তার কোন জবাবদিহি দেশবাসী পায়নি।”
মেনন বলেন, “উন্নয়নের ফল মাত্র কিছু লোক পাচ্ছে। জনগণ পাচ্ছে না। সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়েছে কিছু হাতে।…দেশের সব ব্যাংক, বীমা, আবাসন, এমনকি প্রবাসে লোক পাঠানো- এসবই এদের হাতে। কেবল ধনী-দরিদ্রই নয়, গ্রাম-শহর, অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য রয়েছে দেশে।”
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “(এটা) আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারত। হেফাজতে ইসলামসহ কিছু ধর্মবাদী দল এর বিরোধিতা করেছে মাত্র। জানি না এখানেও আপোষ হয়েছে কিনা। এক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষায় যেমন পরিবর্তন আনতে হবে মাদ্রাসার শিক্ষার ক্ষেত্রেও তাই।”
তিনি বলেন, জামায়াত রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, বিচ্ছিন্ন, বিভক্ত। কিন্তু এদের মাধ্যমেই সমাজজুড়ে সাম্প্রদায়িক মানসিকতার বিস্তার ও একটি উত্তেজনাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অশান্তি সৃষ্টি হবে।
বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।