কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুর্নীতিসহায়ক: টিআইবি

প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2019, 04:03 PM
Updated : 14 June 2019, 04:38 PM

শুক্রবার এক বিবৃতিতে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি বলেছে, কালো টাকা ব্যবহারের সুযোগপ্রাপ্ত খাতে দুর্নীতির একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সৎপথে এসব খাতে আয় ও সম্পদ আহরণের সুযোগ ধূলিস্যাৎ হবে; এর প্রভাবে দুর্নীতির বিস্তৃতি ও গভীরতা আরো বাড়বে।

‘সমৃদ্ধ আগামীর’ প্রত্যাশা সামনে রেখে আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোসহ কয়েকটি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান সম্পদ ও আয়বৈষম্য নিরসনে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব না রাখা ও সংকটাপন্ন ব্যাংক খাতের সংস্কারে কার্যকর পথনির্দেশ বা পরিকল্পনা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংবিধানের সুনির্দিষ্ট লঙ্ঘন ও দুর্নীতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির পরিপন্থী হলেও এবারের বাজেটে ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগের’ পরিধি বাড়ানো হয়েছে।”

এবারের বাজটে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে এবার জমি কেনায় বিনিয়োগ এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে বিনিয়োগকে যুক্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কেবলমাত্র ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে অবৈধটাকে বৈধতা দেওয়ার অর্থ সমাজে বৈধভাবে উপার্জন করাকে নিরুৎসাহিত করা, যা অন্যদিকে চরম বৈষম্যমূলক, কারণ সৎপথে উপার্জনকারীকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট খাতে জনগণের করের টাকায় নতুন করে বাড়তি প্রণোদনার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা এ খাতের শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় কি কোনো ভূমিকা রাখবে এবং তা কীভাবে, সে ব্যাপারে সরকার, বা যাদের চাপে এটা করা হলো তাদের কোনো বিবেচনা রয়েছে এমন ইঙ্গিত নেই।”

ক্রমবর্ধমান রাষ্ট্রীয় ঋণের বিষয়ে উদ্বেগ তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশাল অঙ্ক ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে এমন বৃহৎ প্রকল্পসমূহে অর্থের যথার্থ ব্যয় এবং কার্যকর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে প্রস্তাবিত বাজেটে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা ও প্রস্তাবনা না থাকা অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের ‘শূন্য সহনশীলতা’ অঙ্গীকারের সাথে সাংঘর্ষিক। রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা বাস্তবিক অর্থে দেশের সাধারণ নাগরিকদেরই বইতে হয়।”

তাই প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থের ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কৌশলগত দিক-নির্দেশনার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের (বিসিসিটিএফ) জন্য কোনো বরাদ্দ না করায় হতাশা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী