জিপিএ-৫ আর গোল্ডেন জিপিএ’র পেছনে শিশুদের ছোটাবেন না: রাষ্ট্রপতি

জোর করে শিশুর ওপর কিছু চাপিয়ে না দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2019, 12:56 PM
Updated : 12 June 2019, 12:56 PM

বুধবার রাজধানীতে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০১৯ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শিশুদের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দিবেন না। এতে তাদের স্বাভাবিক বেড়ে উঠা বাধাগ্রস্ত হবে। শিশুদের অশুভ প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিবেন না।

“জিপিএ-৫ আর গোল্ডেন জিপিএর পেছনে না ছুটে শিশুদের প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ দিন। তাদের মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন। দেখবেন বড় হয়ে তারা দেশ ও জাতির জন্য অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠবে।”

শিশুদের দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “মনে রাখবেন, যে কোনো বিষয়ের স্থায়িত্ব নির্ভর করে তার ভিত্তির উপর। যার ভিত্তি যত শক্ত তার স্থায়িত্ব তত বেশি। তাই ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করবেন। তাদেরকে দেশ ও জাতির সঠিক ইতিহাস জানতে দিন।

“অন্যের বা ভিন দেশের প্রভাব প্রতিপত্তির প্রতি আকৃষ্ট না করে আমাদের যা কিছু আছে তা নিয়ে গর্ব করতে শেখান। অন্যের পায়ে না দাঁড়িয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখান। দেখবেন তাহলে তারা আত্মনির্ভর ও আত্মমর্যাদাশীল হয়ে বড় হয়ে উঠবে, যা একটি দেশ ও জাতির উন্নয়নে অপরিহার্য।”

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে শিশুদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, “তোমরাও জন্ম শতবার্ষিকী পালনে অংশীদার হবে। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানবে। বিশেষ করে তার নীতি-আদর্শ, পরোপকারী মনোভাব, নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পর্কে জানবে এবং নিজের জীবনে তা প্রতিফলিত করবে। বঙ্গবন্ধু শুধু আমাদের স্বাধীনতাই এনে দেননি, স্বাধীনতার সুফল ধনী-দরিদ্র, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার সার্বিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

“কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তা হতে দেয়নি। দীর্ঘদিন পরে হলেও তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে। অগ্রগতির যাত্রাপথে তোমাদেরও শরিক হতে হবে। নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে যোগ্য অংশীদার হিসেবে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিজেদের জীবনে লালন করতে হবে। দেশকে ভালোবাসতে শিখবে। অন্যায় ও অসত্যের সাথে কখনও আপস করবে না। সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলবে, তাহলেই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবে।”

এর আগে রাষ্ট্রপতি জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০১৯- এ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।

পরে শিশুদের পরিবেশনায় সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখেন রাষ্ট্রপতি।