মহানগর হাকিম দিদার হোসেন মঙ্গলবার নওশাবার বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন। তার আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার আদেশও বাতিল করেছেন বিচারক।
নওশাবার আইনজীবী এএইচ ইমরুল কাওসার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত নওশাবা জামিনে ছিলেন। তিনি জামিনে মুক্তির পর ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারার সুবিধা নিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দিতেন।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে এ মামলার নথিপত্র বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক শওকত আলী সরকার গত ১২ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
সেখানে বলা হয়, “কাজী নওশাবা ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটনোর জন্য মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ এবং প্রচার করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ (সংশোধনী) এর ৫৭ (২) ধারায় অপরাধ করেছেন।”
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত বছর ৪ অগাস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে নওশাবাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই দিন আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার জিগাতলায় সংঘর্ষ বাঁধলে ফেইসবুকে লাইভে এসে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু এবং একজনের চোখ তুলে ফেলার ‘খবর’ দেন নওশাবা, যা পরে গুজব প্রমাণিত হয়।
নওশাবাকে গ্রেপ্তার করার পর তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করে র্যাব। ওই মামলায় দুই দফায় মোট ছয়দিন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।
পরে কোরবানির ঈদের আগে ২১ অগাস্ট জামিনে মুক্তি পান নওশাবা। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেইসবুকে একটি বার্তা দেন এই অভিনেত্রী, যা তার স্বামী এহসান রহমান জিয়ার ফেইসবুক ওয়ালে প্রকাশ করা হয়।
‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘ভুবন মাঝি’সহ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করা নওশাবার ওই বার্তায় বলা হয়, “আমি আবারো একান্ত অনুরোধ করে বলতে চাই, যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার চিরায়ত মাতৃত্বসুলভ মমতায় আমার আবেগতাড়িত ও অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন।”