ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিপি নূরকে ইফতার অনুষ্ঠানে যেতে বাধা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি ইফতার পার্টিতে যেতে বাধা দিয়েছে স্থানীয় ছাত্রলীগ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2019, 04:08 PM
Updated : 25 May 2019, 04:08 PM

এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে শনিবার বিকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেসকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আগের একটি স্টেশনে প্রায় এক ঘণ্টা থামিয়ে রাখা হয়।

নূরকে ওই অনুষ্ঠানে যেতে বাধা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভিপি নুরুল হকের আগমনের খবর পেয়ে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি, এই অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অনেক শিবির সদস্য উপস্থিত হয়েছেন। 

“এ খবর পেয়ে অনুষ্ঠানটি প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আমরা ভিপি নূরকে আমরা বাধা দেইনি, বাধা দিয়েছি তার অনুষ্ঠানে থাকা জামাত-শিবিরকে।”

অনুষ্ঠানে শিবির নেতাদের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তা অস্বীকার করেন নূর।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণে তিনি সেখানে যাচ্ছিলেন।

“এখন সত্যকে আড়াল করার জন্য মিথ্যা নাটক সাজানো হচ্ছে।”

শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের গ্রান্ড এ মালেক চাইনিজ রেস্টুন্টে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা। সেখানেই প্রধান অতিথি করা হয়েছিল ডাকসুর ভিপি নূরকে। ওই ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উদ্দেশে চট্টলা এক্সপ্রেসে চড়েছিলেন নূর।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিকেলে সেখানে গিয়ে ইফতার অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় বলে জানায় রেস্টুরেন্টের মালিকপক্ষ।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তৎপরতায় শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়। রেলওয়ে স্টেশনে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য অবস্থান নেয়। ‘নিরাপত্তার’ কারণ দেখিয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে বিকেল ৪টা ৩৩ মিনিট থেকে ৫টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তালশহর রেলওয়ে স্টেশনে থামিয়ে রাখা হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনে যাত্রীরা।

পরে রেলওয়ে পুলিশ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল তালশহর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে নূরের সঙ্গে কথা বলে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী মাস্টার মো. মাঈনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিরাপত্তাজনিত কারণে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে লাইন ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়নি। ফলে ট্রেনটি তালশহর রেলওয়ে স্টেশনে থামিয়ে রাখা হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর ট্রেনটিকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়।”

আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মো. সেলিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজকরা ভিপি নূরের আগমন সম্পর্কে আগে থেকে পুলিশকে কিছু জানায়নি।

“আমি ভিপি নুরুল হককে ফোন করে জানতে চেয়েছি, আপনি আসবেন পুলিশকে জানাবেন না? জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার বন্ধু বান্ধবদের সাথে ইফতার করতে এসেছিলাম।”

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কারও অস্তিত্ব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খুঁজে পাননি বলে দাবি করেন তিনি।

পরে পুলিশের পাহারায় ওই রেস্তোরাঁর সামনের খোলা জায়গায় নূর তার সহযোগীদের নিয়ে ইফতার সারেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মহানগর গোধূলীতে তিনি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন বলে রেল কর্মকর্তা মাঈনুল হক জানান।