যানবাহনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কেন নয়: হাই কোর্ট

আইন অনুযায়ী গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রুল জারি করেছে আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2019, 10:10 AM
Updated : 22 May 2019, 10:10 AM

মটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর ধারা ৬০(৩) এবং ২০১৭ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালকের জরি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বাস, মিনিবাসসহ সব ধরনের যানবাহনে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

এছাড়া সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের জানমাল রক্ষায় যানবাহনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছে আদালত।

যোগাযোগ সচিব, স্বারষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান, ফায়ার সর্ভিসের মহাপরিচালক ও বিআরটিএর প্রকৌশল পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রুল জারি করে। 

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিছবাহুল আনওয়ার। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. সোহরাব সরকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

আইনজীবী সৈয়দ মিছবাহুল আনওয়ার পরে সাংবাদিকদের বলেন, “যানবাহনে ওভারহিটিংসহ বিভিন্ন কারণে প্রায়ই অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে গণপরিবহনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার বিধান আইনে থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও ব্যবস্থা যদি যানবাহনে থাকে তাহলে এরকম দুর্ঘটনা খুব সহজেই এড়ানো যায়।

“তাছাড়া বর্তমানে বাজারে অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে এবং যানবাহনে ব্যবহার উপযোগী অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না থাকায় জনসাধারণ বা যাত্রীসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই রিট আবেদনটি করা হয়। আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা স্থাপনের বিষয়ে রুল জরি করেছেন।”

চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে সানরাইজ প্লাজার সামনে রাস্তার গ্যাস পাইপ ছিদ্র হয়ে একটি বাসে আগুন ধরে যায়। এতে আটজন যাত্রী আহত হন।

২৯ মার্চ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নূরে মক্কা পরিবহনের একটি বাসের ইঞ্জিন অতিরিক্ত আগুন ধরে যায়।

এছাড়াও গত বছরের ৫ জানুয়ারি ফার্মগেইটে রাইদা পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরে ১২ যাত্রী আহত হন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিংয়ে চলন্ত একটি বাসের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন ধরে যায়।

একইভাবে ২০১৭ সালের ২৪ জুন সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিপিএটিসির সামনে বিআরটিসির দ্বিতল একটি বাসে আগুন ধরলে ১৫ যাত্রী আহত হন। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর শাহবাগে একটি বাসের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেশের বিভন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিদুর্ঘটনার প্রকাশিত খবর যুক্ত করে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হাই কোর্টর সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী আবুল বারাকাত মো. সাজ্জাদ আল বারী সোহেল।

সেই রিটের ওপর শুনানি করেই হাই কোর্ট রুল জারি করল।