ঘূর্ণিঝড় ফণী: মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রামে বিপদ সংকেত

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশ উপকূলের ৯১৫ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ার পর সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে মোংলা, পায়রা, চট্টগ্রামে বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 04:49 AM
Updated : 2 May 2019, 07:36 AM

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মাত্রা একই। ঝড় বন্দরের কোন দিক দিয়ে যাবে তার ভিত্তিতে নম্বর আলাদা করা হয়।

“বিপদ সংকেতের মানে হচ্ছে, বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রবন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।”

কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বুধবার দুপুরে দেশের সবগুলো বন্দরেই ৪ নম্বর সংকেত জারি করা হয়েছিল।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল এ ঘূর্ণিঝড় আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার ভারতের ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ৩ মে সন্ধ্যার দিকে খুলনাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারে।

তবে বর্তমান গতিপথ ঠিক থাকলে এ ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে শুক্রবার সকাল থেকেই।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সামনে অমাবস্যা থাকায় ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের স্থলভাগ পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ এবং সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে তমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের নিরাপদ আশ্রয়েই থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।