হয় ‘সিন্ডিকেট’ থাকবে, না হয় আমি থাকব: গণপূর্তমন্ত্রী

রাজউক ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘সিন্ডিকেট’ করে মানুষের দুর্ভোগ তৈরি করছে মন্তব্য করে তাদের হুঁশিয়ার করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2019, 10:49 AM
Updated : 25 April 2019, 10:55 AM

সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কেউ নয়- একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, সবাইকে একবার সুযোগ দিচ্ছেন। এরপর যদি কারও ‘সিন্ডিকেটবাজির’ প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাকে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বাইরে আমার মন্ত্রণালয়ের দুটি দপ্তর বিশেষ করে রাজউক এবং গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে খুব সুখকর কথা বলে না। যে অপবাদটা আমাদের কাঁধে এসেছে তা একেবারেই অপবাদ না। কিছু কিছু ‘বাদ’ আছে। যদি বলি সব অভিযোগ অসত্য তা ঠিক হবে না।

“জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে কারা কারা সিন্ডিকেট তৈরি করে লোকজনকে হয়রানি করছে তা জানা আছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রেজাউল করিম বলেন, এই মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন দপ্তরে সব ‘ফেরেশতা’ বসে আছে ভাবার কোনো সুযোগ নাই। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

“আমরা সকলকে একটা সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছি, ভালো হতে বলেছি। ভালো যদি না হয় তাহলে এর ফলটা পাবেই। সিন্ডিকেটের ব্যুহ আমি ভেদ করবই, এ ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী। আমি হারিয়ে যাব অথবা যাদের কারণে মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে তারা এখান থেকে হারিয়ে যাবে।”

অপরাধ করলে কাউকে ছাড় হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যেহেতু আমার কোনো আলাদা স্বার্থ নাই, ফলে কাউকে বিশেষ অনুকম্পা দেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের চেয়ে পাওয়ার ফুল কেউ না। যদি কেউ এখানে সিন্ডিকেট ব্যবসা করতে চান হি উইল হ্যাভ টু ফেস সিরিয়াস কনসিকোয়েন্স।

“শেখ হাসিনা ‘জিরো টলারেন্সে’ এ সরকার চালাতে চান। আমি তার কেবিনেট মন্ত্রী হিসেবে আজ অঙ্গীকার করছি, সিন্ডিকেটে যদি ন্যূনতম কারও ইনভলবমেন্ট পাই, তার পরিণতি খারাপ হবে।”

সেবা সহজ করা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ২৬টি সেবার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে এখানে সেবা পেতে আগের চেয়ে অনেক কম সময় লাগবে।

নানা জটিলতায় সেবাগ্রহীতাদের অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা করতে হয়। ফলে মানুষ ভোগান্তির শিকার হন। এজন্য নিজের মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থায় পরিবর্তন আনার কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, নিজে সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন বলে মানুষের ভোগান্তিটা বুঝতে পারেন।

“আমি মনে করি, দীর্ঘসূত্রতার অবসান করতে হবে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে হবে, সেবাকে সহজ করতে হবে। স্বচ্ছতা আনতে হবে। আমরা যদি সুশাসন নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে বাংলাদেশে অনেক কিছু হতে পারে, কিন্তু মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। নাগরিকরা তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পাবে না।”

তিনি জানান, আগামী ১ মে থেকে রাজউকের সব কাজ অটোমেশন হবে। আর ১ জুন থেকে গৃহায়নের সব কাজ ঘরে বসেই করা যাবে। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।