নারী নিপীড়ন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সংসদে আলোচনার দাবি

নারীর প্রতি সংহিসতা, জঙ্গিবাদ ও সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে সংসদে একটি বিশেষ আলোচনার দাবি জানিয়েছেন সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2019, 07:10 PM
Updated : 24 April 2019, 07:10 PM

শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলা এবং ফেনীর প্রতিবাদী মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা ঘটনা ধরে বুধবার এক অনির্ধারিত আলোচনায় এ দাবি তোলা হয়।

সংসদে এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

এরপর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, মইন উদ্দিন খান বাদল, জাতীয় পার্টির রুস্তুম আলী ফরাজী, গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ আলোচনা করেন।

নাসিম বলেন, “বিগত দুই মাসে দেশে-বিদেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে। হিংসা বিদ্বেষে রক্তাক্ত হয়েছে বিদেশের মাটি, মন্দির-মসজিদ-গির্জা। প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়েছে নুসরাত। প্রধানমন্ত্রীর মমতাময়ী হাত তাকে রক্ষা করতে পারেনি। তিনি মায়ের মমতা দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন নুসরাততে রক্ষা করতে।

“নিউজিল্যান্ডে জু্ম্মারত মানুষকে হত্যা করা হল। শ্রীলঙ্কায় প্রতিহিংসায় মানুষ মারা গেছেন। ধর্মের নামে মানুষ মানুষকে হত্যা করছে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা রক্ষা হচ্ছে না। এই সংসদে এইসব বিষয় নিয়ে সাধারণ আলোচনা হওয়া উচিত।”

তোফায়েল আহমেদ বলেন, “শ্রীলঙ্কার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় আমরা চোখের পানি রাখতে পারিনি। ওই ঘটনায় শোক প্রকাশের ভাষা আমাদের নেই।

“প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তির দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আগুনে দ্বগ্ধ হয়ে নুসরাতের মৃত্যুর বিষয়টি সমস্ত জাতির হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ওই ঘটনায় একজন ছাড়া সকল অপরাধী গ্রেপ্তার হয়েছে।”

তিনি বলেন, “নিষ্পাপ শিশুদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে স্কুল থেকে যাওয়ার সময়। বাড়িতে ঢুকে। এই সামাজিক অবক্ষয় কারো কাম্য হতে পারে না।”

তোফায়েল আহমেদ বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধী উপলব্ধি করবে না যে ‘আমি অপরাধ করে মাফ পাব না, পার পাব না, আমাকে শাস্তিভোগ করতে হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই সামাজিক দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না।”

মেনন বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি গঠনের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। দীর্ঘদিন আগে এই নির্দেশনা দেওয়া হলেও সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।“

ইনু বলেন, “এসব অপরাধের রাজনৈতিক বিষয় রয়েছে। মুখোশধারী ধর্মীয় ব্যবসায়ীরা ক্রমাগত ভিন্ন ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে চলেছে। ক্রমাগত দেশের সংবিধানের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলছে। ক্রমাগত তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে নারীদেরকে খাটো করার চেষ্টা করছে। তারাই নারী নির্যাতনের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক।

“ধর্ম ব্যবসায়ী ও নারী নির্যাতন ও নারী বিদ্বেষের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা দরকার। যারা নারীর বিরুদ্ধে কথা বলে তারা রাজাকারের বংশধর। যারা হোলি আর্টিজানে আক্রমন করে তারা জঙ্গি সন্ত্রাসী এবং পাকিস্তানীপন্থি ধর্মের মুখোশধারী দানব। সেই দানবদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”