তামাক বিক্রি ও প্রদর্শন বন্ধে স্কুল কমিটির ভূমিকা চান নওফেল

স্কুলের আশপাশের দোকানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি ও প্রচারে লাগাম টানতে সংশ্লিষ্ট স্কুলের কমিটিকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2019, 05:08 PM
Updated : 23 April 2019, 05:08 PM

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা আহছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘বিগ টোব্যাকো টাইনি টার্গেট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এ আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি তামাকজাত পণ্যের কেনাবেচার ব্যবস্থা থাকায় শিশুরা সহজেই এতে আসক্ত হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নওফেল।

তিনি বলেন, “স্কুলের আশপাশে বিশেষ করে একশত মিটারের মধ্যে দোকানগুলোতে সিগারেট ও তামাক জাতীয় দ্রব্য প্রদর্শনের কারণে শিশুরা তামাক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

“স্কুলের কমিটিগুলো আমরা অনুমোদন দেই। উনারা যদি সচেতন হন তাহলে এই দৃশ্যমান করাটা অনেক কমে আসবে।”

তামাকজাত দ্রব্যের প্রচারণায় যেন শিশুরা প্রভাবিত না হয় সে বিষয়টি স্কুল কমিটিগুলোর নীতিমালাতে যোগ করার কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল। 

তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে কমিটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে তাদের কার্যক্রমের পাশাপাশি এই টার্মটিও সংযুক্ত করে দিতে হবে।

“আমি আশা করছি, স্কুল কমিটি এখন থেকেই নিজ উদ্যোগে নিজেদের কার্যক্রমের পাশাপাশি স্কুলের একশত গজের মধ্যে দোকানগুলোতে তামাক জাতীয় দ্রব্য দৃশ্যমান বন্ধে কাজ করবেন।”

স্কুলের আশপাশে সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রচার করা বন্ধে জরিমানা প্রথা চালু হলে এই প্রচারণা বন্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

সারা দেশে তামাক দ্রব্য ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনাসহ স্কুল-কলেজের আশপাশে বিক্রি ও বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য আলাদা তামাক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করেন তিনি।

সেমিনারে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের বলেন, “শিশু-কিশোর ও যুব সমাজকে তামাক ও ধূমপানে আসক্ত করা ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন কূট-কৌশলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই বিষয়গুলোতে নজর রাখতে হবে।”

সেমিনারের সভাপতি ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক এম এহছানুর রহমান বলেন, “গ্লোবাল ইয়্যুথ সার্ভে ২০১৩ -তে দেখা যায় ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তামাক বিক্রির দোকানে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচারণা দেখে থাকে। এটা শিশু-কিশোরদের তামাকের প্রতি আকৃষ্ট করার একটি কূট-কৌশল।” 

তিনি বলেন, “বিগ টোব্যাকো টাইনি টার্গেট বাংলাদেশের একটি জরিপে দেখা যায় ৯০ দশমিক ৫ ভাগ স্কুল-কলেজের একশ মিটারের মধ্যে তামাক দ্রব্যের বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়। আর ৮১ দশমিক ৮৭ ভাগ বিজ্ঞাপন স্কুল-কলেজ ও খেলার মাঠের যে সকল শিশু দোকানে যায় তাদের দৃষ্টির এক মিটারের মধ্যে।”

এভাবে শিশুরা তামাকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এহছানুর রহমান।

‘যেভাবেই হোক’ স্কুল-কলেজ ও খেলার মাঠের একশত মিটারের মধ্যে তামাক দ্রব্যের বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ঢাকা আহছানিয়া মিশনের এই কর্মকর্তা।