লক্ষ্মীপুরের সেই দগ্ধ তরুণী বাঁচলো না

স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরে আসার পর আগুনে দগ্ধ সেই তরুণী মারা গেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2019, 07:29 AM
Updated : 22 April 2019, 07:39 AM

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শাহীনুর আক্তার (২২) নামের ওই তরুণী সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান বলে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শাহীনুরের শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

রোববার রাত ২টার দিকে বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল শাহীনুরকে।

তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নতুনহাট এলাকার সোনাগাজী গ্রামে।

রোববার লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার পাটারিরহাট এলাকায় রোববার আগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটে বলে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানিয়েছিলেন।

প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয় শাহীনুরকে।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে শাহীনুর সংবাদকর্মীদের জানিয়েছিলেন, দুই বছর আগে মোবাইল ফোনে কমলনগরের পাটারীরহাট এলাকার মোহর আলীর ছেলে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে তার প্রেম হয় এবং এর কয়েকমাস পরে রাউজানে তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকে তার স্বামী এক বছর শ্বশুরালয়ে আসা-যাওয়া করলেও স্ত্রীকে কখনই নিজের বাড়ি নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি বলে মেয়েটির ভাষ্য।

শাহীনুরের জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন সময়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি আসার তাগিদ দিলেও তাতে সাড়া দেননি স্বামী সালাহ উদ্দিন। এ অবস্থায় খোঁজখবর নিয়ে গত শুক্রবার রাতে তিনি একাই আসেন স্বামীর বাড়ি। সেখানে এসে দেখতে পান সালাহ উদ্দিন দুই সন্তানসহ অন্য স্ত্রী নিয়ে অনেক আগে থেকেই সেখানে সংসার করছেন।

শাহীনুর নিজেকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলে সালাহ উদ্দিন তা অস্বীকার করেন। এরপর তিনি স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ের আশায় দুই দিন ধরে এলাকায় বিভিন্নজনের কাছে ধর্না দেন বলে জানান। 

বিষয়টি তিনি স্থানীয় চরফলকন ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হাফিজ উল্যা ও গ্রাম পুলিশ আবু তাহেরকে জানান। তারা বিষয়টি সুরাহা করার কথা বলে দুই দিন সময়ক্ষেপণ করেন বলে মেয়েটির অভিযোগ ছিল।

ওই অবস্থায় রোববার বিকালে সালাহ উদ্দিন তাদের বাড়ির পাশের একটি সয়াবিন ক্ষেতে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন বলে শাহীনুর বলেছিলেন।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য হাফিজ উল্যা বলেছেন, ওই তরুণী নিজেই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন। গায়ে আগুন ছড়িয়ে পড়লে পাশের এক বাড়িতে গামলার পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন।