তার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগের পথ খুলবে বলে সরকারের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হন।
বাংলাদেশ সময় দুপুর পৌনে ১টায় ব্রুনেইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানের ব্রুনেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব আব্দুল করিম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খানও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবি, বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রুনেই গেছে।
ব্রুনেই পৌঁছানোর পর দেশটির যুবরাজ হাজী আল মুহতাদি বিল্লাহ বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন। সেখানে তাকে দেওয়া হবে গার্ড অব অনার।
পরে মোটর শোভাযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হবে দ্য এম্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে। সফরে এই হোটেলেই অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরের প্রথম দিন ওই হোটেলের বলরুমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। পরে বাংলাদেশ হাই কমিশনারের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী ব্রুনাইয়ের সুলতান বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নুরুল ইমানের চেরাদি লায়লা কেনচানায় রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন।
সেখানে সুলতানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্রুনেই সফর নিয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সমঝোতা স্মারক ছাড়াও দুই দেশের কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসা ছাড়া ভ্রমণের সুযোগ দিতে কূটনৈতিক নোট বিনিময় হতে পারে দ্বিপক্ষী বৈঠকের পর।
“ব্রুনেইয়ের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী আমরা।”
ব্রুনেই ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মাত্র ১০ লাখ ডলারের মত। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সক্ষমতা আছে দেশটির।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মো. কামরুল আহসান বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারীদের একটি ব্রুনেই।
“তারা আমাদের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। তাদের চাহিদা মত খাবার প্রস্তুত করে এখান থেকে রপ্তানি করতে পারে।”
এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির বিষয়েও আলোচনা হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে।
সোমবার বিকালে এম্পায়ার হোটেলে ব্রুনেই ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে তিনি জামে আসর মসজিদ পরিদর্শন করবেন এবং সেখানে আসরের নামাজ আদায় করবেন। সুলতানের সরকারি বাসভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সন্মানে দেওয়া ভোজসভাতেও তিনি যোগ দেবেন।
মঙ্গলবার সকালে ব্রুনেইয়ের রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা জালান কেবাংসানে বাংলাদেশ হাই কমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শেখ হাসিনা। পরে তিনি রয়েল রেজালিয়া জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
সেদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় ঢাকার উদ্দেশে ব্রুনাই ছাড়বেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।