বিয়ে বিচ্ছেদে সালিশি কাউন্সিল কার্যকরে হাই কোর্টের রুল

বিয়ে বিচ্ছেদে সালিসি কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2019, 02:20 PM
Updated : 15 April 2019, 02:20 PM

জনস্বার্থে করা এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ সোমবার এ রুল জারি করে।

কোরান ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী বিয়ে বিচ্ছেদ, সন্তান হেফাজত, দেনমোহর ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করতে সালিসি কাউন্সিলের নীতিমালা করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

এছাড়া কোরান ও আইন অনুযায়ী স্বামী স্ত্রীর বিয়ে বিচ্ছেদ, ভরণপোষণসহ অন্যান্য খরচা নিষ্পত্তি করতে সালিসি কাউন্সিল কার্যকর করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছে আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগেরে সচিব (ড্রাফটিং), মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

ফাওজিয়া করিম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী কোনো পক্ষ ৯০ দিনের মধ্যে আপস বা তালাকনামা প্রত্যাহার না করলে তালাক কার্যকর হয়ে যায়।

আর তালাকের নোটিস পাঠানোর পর সালিসি কাউন্সিল মধ্যস্থতার জন্য ৯০ দিনে তিনবার উভয় পক্ষকে নোটিস দিয়ে ডাকার বিধান রয়েছে। কিন্তু কাউন্সিলের এ ডাকে কোনো পক্ষ যদি না আসে তবে তালাক কার্যকর হয়।

ফাওজিয়া বলেন, “প্রশ্ন হচ্ছে এটি কার্যকর হলে তো সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। কিন্তু এর সঙ্গে দেনমোহর, ভরণপোষণ, সন্তান থাকলে তার জিম্মা নেওয়ার বিষয় থাকে। এ কারণে তালাক হয়ে যাওয়ার পরও এ বিষয়গুলো নিয়ে মামলা হয়, যা নিষ্পত্তিতে অনেক সময় লেগে যায়।

“তাই আমরা চেয়েছি কোরানের স্পিরিট ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী সালিশি পরিষদ কার্যকরে একটি নীতিমালা করার নির্দেশনায় রুল জারি করতে। আদালত রুল জারি করেছেন।”

‘ঢাকায় ঘণ্টায় এক তালাক’ দৈনিক প্রথম আলোতে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন দৈনিকে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে সম্পাদক সীমা জহুর ও আইনজীবী কাজী মারুফুল আলম এ রিট আবেদনটি করেন।

গত বছর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয় বছরে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অর্ধ লক্ষের বেশি তালাকের আবেদন জমা পড়েছে। এ হিসাবে মাসে গড়ে ৭৩৬ টি, দিনে ২৪ টির বেশি এবং ঘণ্টায় একটি তালাকের আবেদন করা হচ্ছে।