চার বছর আগের এই মামলায় ফারাবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বুধবার তাকে খালাসের রায় দেন বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামশ জগলুল হোসেন।
আদালতের পেশকার শামীম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফারাবী ২০১৫ সালে লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়, সিলেটের অনন্ত বিজয় হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামালারও আসামি।
রায় ঘোষণার আগে ফারাবীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
ফেইসবুকে উগ্রপন্থি বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার এবং লেখক-সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ রমনা থানায় ফারাবীর বিরুদ্ধে এই মামলা হয়।
অভিজিৎ হত্যা মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান এই মামলা করেন।
ফারাবী ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ২১ অগাস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেটে অনেককে হত্যার হুমকি দেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।
নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের একটি লেখা প্রকাশ করায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামকেও তিনি হত্যার হুমকি দেন বলে এতে বলা হয়েছে।
মামলায় ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর ফারাবীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন সাতজন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসির উত্তর পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী লেখক অভিজিৎ রায়কে।
ফেইসবুকে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ফারাবী। অভিজিৎ নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে তার নাম নতুন করে আলোচনায় আসে।
উগ্রবাদীদের পক্ষে বিভিন্ন সময় কার্যক্রম পরিচালনাকারী ফারাবী বাংলা বই বিক্রির ওয়েবসাইট ‘রকমারি ডটকম’ থেকে অভিজিৎ রায়ের বই সরাতেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
অভিজিৎ হত্যার আগে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের জানাজা পড়ানোয় ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়েও ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে ফারাবী।
ওইবছর ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইট এলাকা থেকে পুলিশ ফারাবীকে গ্রেপ্তার করে। ফেইসবুক ব্যবহার করে ইমামকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে জুন মাসে ঢাকার একটি আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগও গঠন করে। কিন্তু হাই কোর্টের জামিনে ২০১৩ সালের ২১ অগাস্ট কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ফারাবী।
অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর ওই বছরের ২ মার্চ ফের ফারাবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় ফরাবীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এ বছরের ১৪ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।