কেমন আছেন জাহালম, তার মুখে শুনবে আদালত

নিরাপরাধ হয়েও দুদকের মামলায় তিন বছর জেল খাটা জাহালম কেমন আছেন, কীভাবে জীবনযাপন করছেন, তা তার মুখ থেকে শুনতে চায় হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2019, 10:06 AM
Updated : 10 April 2019, 10:06 AM

এজন্য আগামী বুধবার জাহালমকে আদালতে নিয়ে আসতে আইনজীবী অমিত দাস গুপ্তকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পরে আমিত দাসগুপ্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাহালম কেমন আছেন, কীভাবে আছেন, তার জীবন-জীবিকা কীভাবে চলছে তা জানতে আগামী বুধবার নিয়ে আসতে বলেছেন আদালত।”

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বুধবার সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি সংক্রান্ত ৩৩টি মামলার নথি হাই কোর্টে জমা দেওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সকালে একটি মামলার সম্পূরক নথি আদালতে জমা দিয়ে শুনানির জন্য বেলা ২টা পর্যন্ত সময় চেয়ে বলেন, জাহালমকে নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে চেয়েছিলেন একজন পরিচালক। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সিনেমা না বানাতে অন্য কোর্ট থেকে একটা আদেশ নিয়েছিলাম। সেই কোর্টে মূল (রিট মামলা) মামলাটির নথি রয়েছে।

“৩৩টি মামলার মধ্যে আমরা একটি মামলার সাপ্লিমেন্টারি দিচ্ছি। সবগুলো মামলার নথি সংগ্রহ করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এ বিষয়টা বিবেচনায় নিয়ে শুনানি ২ টায় রাখলে ভালো হয়।”

আদালত তখন বলে, “আপনাকে আরও ৩২ মামলার কাগজপত্র দিতে হবে। ২টায় না ৩টায় রাখলাম।”

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার নিজেদের অসুবিধার কথা জানিয়ে শুনানি ‘নট টুডে’ করার অনুরোধ জানান।

খুরশীদ আলম খান তখন বলেন, আগামী সপ্তাহে হলে সবচেয়ে ভালো হয়।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ তখন আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রেখে জাহালমকে নিয়ে আসতে বলে আইনজীবী অমিত দাস গুপ্তকে।

এই আইনজীবীই জাহালমের বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে এনে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আদালতে কাছে, যার প্রেক্ষিতে আদালত জাহালমকে জামিন দেয়।

আদালত অমিত দাসগুপ্তকে বলে, “আগামী বুধবার তাকে আসতে বলবেন। কী অবস্থায় আছে, তার জীবন-জীবিকা কীভাবে চলছে, কীভাবে জীবনযাপন করছে আমরা জানতে চাই। ”

অমিত দাসগুপ্ত তখন বলেন, “সে তো জামিনে আছে। জাহালম আজও আদালতে আছেন। আপনারা চাইলে ডাকতে পারি।”

তখন আদালত বলে, “না থাক। আজ না, আগামী বুধবার আসতে বইলেন।” 

সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে কাটাতে হয় টাঙ্গাইলের জাহালমকে।

গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সেদিন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত।   

পরে আদালতের আদেশে ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম।

গত ৬ মার্চ জাহালমের বিরুদ্ধে দুদকের করা সব মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর), অভিযোগপত্রসহ (সিএস) যাবতীয় নথি চেয়ে বুধবার শুনানির জন্য রেখেছিল হাই কোর্ট। 

ওই দিন বাংলাদেশ ব্যাংকসহ পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংককে পক্ষভুক্ত করার আবেদন গ্রহণ করে আদালত জাহালমকাণ্ডে সম্পৃক্ত বাকি ব্যাংকগুলোকেও পক্ষভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল দুদককে।