গ্রিন লাইন রাসেলকে কী দিল, জানাতে হবে বিকাল ৩টায়

বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার অগ্রগতি জানাতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বুধবার বিকাল তিনটা পর্যন্ত সময় দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2019, 06:52 AM
Updated : 10 April 2019, 06:53 AM

আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাসেলকে ৫০ লাখ দিতে বুধবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ। টাকা না দিলে গ্রিন লাইনের সব বাস জব্দ করা হবে বলেও মালিকপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল।

কিন্তু রাসেলের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে এই রিট করা আইনজীবী উম্মে কুলসুম বুধবার শুনানির শুরুতেই আদালতকে বলেন, গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের যোগাযোগই করেনি।

গ্রিন লাইন পরিবহনের প্রোপাইটার হাজী মো. আলাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির আইনজীবী অজি উল্লাহ।

শুনানিতে তিনি বলেন, হাজী আলাউদ্দিন অসুস্থ। তাছাড়া আরও কিছু জটিলতা আছে। টাকা দিতে তাদের এক মাস সময় প্রয়োজন।

বিচারক তখন বলেন, “উনি অসুস্থ, কিন্তু উনার ব্যবসা তো থেমে নেই, ব্যবসা তো চলছে।”

আইনজীবী অজি উল্লাহ এ সময় আদালতকে বলেন, গ্রিন লাইন পরিবহন অনেক দিন ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে, এরকম অ্যাক্সিডেন্ট আগে ঘটেনি।

বিচারক তখন বলেন, “অ্যাক্সিডেন্ট তো হতেই পারে, কিন্তু এটা তো অ্যাক্সিডেন্ট না…। রাসেল একজন ড্রাইভার। একজন শ্রমজীবী মানুষ। এতদিন হাসপাতালে থাকল, একটা দিন আপনারা খোঁজ খবর নিলেন না। একটা পা গেছে, আরেকটা পা যেতে বসেছে…।

“আজকে যদি একটা কিছু নিয়ে আসতেন তাহলে আমরা বুঝতাম একটা মানবিকতা আপনারা দেখিয়েছেন। কিন্তু কিছুই দেন নাই এখন পর্যন্ত। কিছু কমপ্লাই করে ৩টায় আসেন।”

এই শুনানিতে উপস্থিত থাকতে ক্র্যাচে ভর দিয়ে আদালতে আসেন রাসেল সরকার, যিনি আগে প্রাইভেট কার চালাতেন। গত বছর ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়।

তার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে সাবেক সাংসদ উম্মে কুলসুমের করা রিট আবেদনে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে। 

কিন্তু ৪ এপ্রিল গ্রিন লাইনের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সাত্তার আদালতে হাজির হয়ে বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছেন, ফিরবেন ৯ এপ্রিল।

এরপর হাই কোর্ট রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে ১০ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দেয় গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষকে।

গ্রিন লাইন পরিবহনের মহা ব্যবস্থাপককে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সেদিন বলেন, “১০ তারিখে আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। যদি আদেশ বাস্তবায়ন না করেন তাহলে ১১ তারিখের কোনো টিকিট বিক্রি করবেন না। আপনারা তো অগ্রিম টিকি বিক্রি করেন। জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলবেন না।”