আবরারের মৃত্যু: ১০ লাখ টাকা ‘দিতেই হবে’ সুপ্রভাত পরিবহনকে

বাসচাপায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর পরিবারকে ‘জরুরি খরচ’ বাবদ ১০ লাখ টাকা দিতে হাই কোর্টের আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2019, 05:33 AM
Updated : 9 April 2019, 06:31 AM

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সুপ্রভাত পরিবহনের মালিকপক্ষ যে আবেদন করেছিল, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার তা খারিজ করে দিয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের ফলে সুপ্রভাত পরিবহনকে এখন ১০ লাখ টাকা ‘দিতেই হবে’।

গত ১৯ মার্চ প্রগতি সরণির বসুন্ধরা গেইটে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর দুই দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল পরদিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর হাই কোর্টের নজরে এনে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে এই রিট আবেদন করেন।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ আবরারের পরিবারকে ‘জরুরি খরচ’ বাবদ ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সুপ্রভাত পরিবহন কর্তৃপক্ষকে ৭ দিনের মধ্যে ওই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।

পাশাপাশি একটি রুল জারি করে হাই কোর্ট। সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণের নিরাপত্তা দিতে কর্তৃপক্ষের ‘অব্যাহত ব্যর্থতা’ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং দুর্ঘটনায় নিহত আবরারের পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চানতে চাওয়া হয় রুলে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক ও সেতু সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, বিআরটিএ, সুপ্রভাত পরিবহনসহ আট বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে গত ২ এপ্রিল চেম্বার আদালতে আবেদন করে সুপ্রভাতের মালিক পক্ষ। চেম্বার আদালত সেদিন কোনো আদেশ না দিয়ে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।

এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি মঙ্গলবার আপিল বিভাগে উঠলে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ সুপ্রভাতের আবেদন খারিজ করে দেয়।

আদেশের পর সুপ্রভাত পরিবহনের আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা বিডিনিউজটোয়েন্টি ফোর ডটকমকে বলেন, "আমাদের যুক্তি ছিল, গাড়িটা আমাদের ছিল না। আমাদের লোগো বা ব্যানারে গাড়িটা চলত। গাড়ির মালিক ননি গোপাল নামের একজনের। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। এজাহারেও আমাদের নাম নাই।

“কোর্টের কথা হল, যেহেতু সুপ্রভাতের ব্যনার ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে, সুতরাং ফল ভোগ করতেই হবে। এই বলে আবেদনটা সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে হাই কোর্টের আদেশটিই বহাল থাকছে।"