হালনাগাদে এবারও ১৫-১৭ বয়সীদের তথ্য নিতে চায় ইসি

চলতি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2019, 06:12 PM
Updated : 8 April 2019, 06:12 PM

এবছরের নতুন ভোটারদের পাশাপাশি ১৫-১৭ বয়সীদের তথ্যও নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে এ কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান।

সোমবার সিইসি কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বুধবারের মুলতবী সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ বছর হয়েছে এবং যেসব নাগরিক যোগ্য হওয়ার পরও বিভিন্ন কারণে ভোটার হতে পারেননি কেবল তাদের ভোটার করা হবে। এ সময় মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে ও ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও নেওয়া হবে।

সব মিলিয়ে বর্তমানে দেশের ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১ জন ভোটারের মধ্যে ৫ কোটি ২৫ লাখ ১২ হাজার ১০৫ জন পুরুষ। আর ৫ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৭৬ জন নারী।

অর্থাৎ, ভোটার তালিকায় পুরুষ ও নারীর অনুপাত- ৫০.৪২: ৪৯.৫৮।

কমিশন সভায় প্রাথমিক আলোচনার বিষয়ে ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, এ বছরের ১ জানুয়ারি ভোটারযোগ্য নাগরিকদের যাদের বয়স ১৮ বছর হয়েছে, তাদের তথ্য নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সীদেরও নিবন্ধন তথ্য সংগ্রহ করবে ইসির তথ্য সংগ্রহকারীরা।

বরাবরের মতো এবারও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহারী নিয়োজিত থাকবে। তারা নাগরিকদের নিবন্ধন তথ্য নেবে।

যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২৩ এপ্রিল থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে ১৩ মে পর্যন্ত।

এবার ২০০১, ২০০২, ২০০৩ ও ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম তাদের হালনাগাদের পর আগামী বছরের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। বাকিরা পরবর্তীতে বয়স ১৮ পূর্ণ হলে, তাদের নামভোটার তালিকায় যুক্ত করা হবে।

সেক্ষেত্রে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ভোটারযোগ্য নাগরিকদের বেশিরভাগই নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে।

ইতোপূর্বে কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময় ২০১৫ সালে একসঙ্গে তিন বয়সীদের (বর্তমানে যাদের বয়স ১৫-১৭ বছর) তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওই সময় প্রায় ৭২ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা পূরণ করতে পারেনি কমিশন। সেবার ভরা বর্ষায় হালনাগাদের কাজ চলায় অনেক এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি না যাওয়ার অভিযোগ ছিল।

সর্বশেষ হালনাগাদে ভোটার তালিকায় যুক্ত হন ৪৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ জন নতুন ভোটার।

৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় দেশের প্রায় ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটার ছিল তালিকায়।

ভোটারের চিত্র

২০০৭-২০০৮: ভোটার প্রায় ৮ কোটি ১১ লাখ (যাদের জন্ম ১৯৯০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে)

২০০৯-২০১০: ভোটার বেড়েছে ৪৭ লাখ ৭৫ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯২)

২০১২-২০১৩: ভোটার বেড়েছে ৭০ লাখ ৭৯ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৫)

২০১৩-২০১৪: ভোটার বেড়েছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৬)

২০১৪: ভোটার বেড়েছে ১৯ লাখ ৬৮ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৭)

২০১৫-২০১৫: ভোটার বেড়েছে ১৬ লাখ ৮ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৮)

২০১৭: ভোটার বেড়েছে ১১ লাখ ৪৪ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৯৯)

২০১৮: ভোটার যোগ হয় ৪৬ লাখ ৫৫ হাজার (জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০০)

২০১৯: ভোটার যুক্ত হবে জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০১ ও তার আগে জন্ম যাদের (বাদ পড়া ভোটার)।

নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরু করে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদা কমিশন।

হালনাগাদের সময় নতুনরা যোগ হয়, মৃত ও দ্বৈত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

আরও খবর