২০১৭ সালে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের যে তালিকা করে এই বাহিনী, তাতে এই চিত্র উঠে আসে।
দুই বছর বাদে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করছে ফায়ার সার্ভিস।
তাতে আগের চিত্রের বদল হয়েছে কি না- বৃহস্পতিবার জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুব কম ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে।”
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতে ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি প্রথম দফা এবং ২৬ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় জরিপ করে ফায়ার সার্ভিস।
দ্বিতীয় দফায় মোট ১ হাজার ৬৬টি ভবন ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ২ হাজার ৫৮৩টি ভবন ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এরমধ্যে ‘খুবই’ অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ১০৫টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক চিহ্নিত হয়েছিল, ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় ছিল ৩০৫টি।
এদিকে গত ফেব্রুয়ারিতে শেরেবাংলা নগরের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। ওই অগ্নিকাণ্ডকে ‘ওয়েক আপ কল’ বলেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন।
দুই বছর আগের জরিপে ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় সবচেয়ে বেশি ছিল বিপণি বিতানগুলো। এমন ৬২২টি ভবন ছিল ওই তালিকায়। এছাড়া ২০টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ও ছিল ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’ ভবনে।
ওই জরিপে মোট এক হাজার ৭৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছিল ফায়ার সার্ভিস।
তখন চিহ্নিত করার পরও ওইসব ভবন মালিকদের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ না দেখার বিষয়টি তুলে ধরে হতাশা প্রকাশ করেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক মেজর শাকিল নেওয়াজ।
তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যেক হাসপাতাল ও স্কুলগুলোতে নোটিস করেছি। দুই বার, তিন বার, চার বারও নোটিস দিয়েছি। চার বার নোটিস দিয়েও যখন কাজ হচ্ছে না, তখন ব্যানার টানাচ্ছি… ব্যানার টানিয়ে আপনাকে সতর্ক করছি যে, এই ভবন ঝুঁকিপূর্ণ।”
শিক্ষার্থীদের অগ্নি নির্বাপন পদ্ধতি নিয়ে সচেতন করতে প্রশিক্ষণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের অনাগ্রহ দেখার কথাও বলেন মেজর শাকিল।
তিনি বলেন, “অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করেছি। যাতে বাচ্চারা ফায়ার প্রশিক্ষণ নেয়। কিন্তু তারা বলে, বাচ্চারা ঘেমে যাবে বা তাদের পরীক্ষা ইত্যাদি ইত্যাদি।”
“নিজ থেকে সচেতনতার লেভেল না বাড়ালে এটা ইমপ্রুভ করা সম্ভব নয়,” বলেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।