ফারুক হত্যা মামলায় আমানুর রানার জামিন বহাল

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2019, 08:19 AM
Updated : 1 April 2019, 08:19 AM

হাই কোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আবদুল বাসেত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা ও আতাউল গনি।

আইনজীবী আতাউল গনি পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় হাই কোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিনই বহাল থাকছে।”

এদিকে টাঙ্গাইলে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে সোমবারই আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানান এ আইনজীবী।

টাঙ্গাইলের আওয়মী লীগ নেতা রানাকে মুক্তির জন্য আপাতত এ মামলায় জামিনের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ মার্চ ফারুক হত্যা মামলায় রানাকে ছয় মাসের জামিন দেয়।

কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত ২৫ মার্চ জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় চেম্বার আদালত।

এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ সোমবার আবেদনটির শুনানি নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দেয়।

বিচারিক আদালতে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ফারুক হত্যা মামলায় এবং ৩০ সেপ্টেম্বর যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় রানার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়। এরপর হাই কোর্টে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।

গত ৬ মার্চ হাই কোর্ট যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় ও ১৪ মার্চ ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় ছয় মাস করে জামিন পান রানা।

১৪ মার্চ আবার যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় পাওয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত করে দেয় চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২৫ মার্চ ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার জামিনও চেম্বার আদালত স্থগিত করে। ফলে কারাগার থেকে আর বের হতে পারেননি টাঙ্গাইল-৩ আসনের এই সাবেক সাংসদ।

আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুক আহমেদকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তৎকালীন এমপি রানা ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালত।

এ মামলায় ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ওই বছর ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০২, ১২০, ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তাদের বিচার শুরু করে আদালত। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।

অন্য মামলাটি দায়ের করা হয় ২০১৩ সালে, তবে ঘটনাটি তার আগের বছরের।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই মোটরসাইকেলে করে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্ত করে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে পুলিশ।

পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরন মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তাদের জবানবন্দিতে আওয়ামী লীগ নেতা আমানুর রহমান খান রানার নাম আসে।

গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ‘রানার নির্দেশেই’ যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।