সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় হিযবুত সমন্বয়ক মহিউদ্দিন খালাস

প্রায় এক দশক আগের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমেদসহ চারজন।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2019, 12:43 PM
Updated : 24 March 2019, 12:54 PM

রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার চালানো ও পেট্রোল বোমা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা এ মামলার ছয় আসামির মধ্যে পলাতক দুজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল।

সাত দফা পেছানোর পর রোববার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) শিক্ষক মহিউদ্দিন আহমেদ এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে তৌহিদুল আলম ও সাইদুর রহমানকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

হিযবুতের সমন্বয়ক মহিউদ্দিনের পাশাপাশি যুগ্ম সমন্বয়ক কাজী মোরশেদুল হক প্লাবন, সদস্য তানভীর আহম্মেদ ও আবু ইউসুফ আলী অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। 

এ আদালতের পেশকার আতাউর রহমান জানান, দণ্ডিত দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দুজন। তাদের একজন সাক্ষ্য দিলেও অন্যজন দেননি। এ কারণে হয়ত হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক খালাস পেয়ে গেছেন। আমরা পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

মহিউদ্দিন আহমেদ (ফাইল ছবি)

রাষ্ট্রবিরোধী উগ্রপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সরকার ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার এ সংগঠনের কর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অর্ধশতাধিক মামলা হয় ঢাকায়।

উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরে তাকওয়া মসজিদের সামনে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টার ও লিফলেট বিলি করার সময় হিযবুত সদস্য তানভীর আহম্মেদ, সাইদুর রহমান রাজিব ও তৌহিদুল আলমকে পেট্রোল বোমাসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহম্মেদের নির্দেশেই তারা সেখানে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয় এ মামলার এজাহারে।

মামলা হওয়ার পরদিন মহিউদ্দিনকে গ্রিনরোডের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। বেশ কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিন পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।

তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ওই চারজনের সঙ্গে আরও দুই জনকে যোগ করে মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার।

কিন্তু সাক্ষী হাজিরে রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতায় বিচারকাজ চলে ঢিমেতালে। অভিযোগপত্রের ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে সাতজনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর এ মামলা রায়ের পর্যায়ে এলেও বিভিন্ন কারণে সাতবার রায়ের তারিখ পেছানো হয়। 

আরো খবর-