ডাকসু নির্বাচন: অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সাত সদস্যের কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2019, 12:33 PM
Updated : 21 March 2019, 12:52 PM

কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক সাজেদা বানুকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটির সদস্যরা হলেন- জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইমদাদুল হক, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান, সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শারমিন রুমি আলীম।

এদের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাকসুদুর রহমানকে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে।

২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ ডাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদগুলোর নির্বাচন হয়। অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় পাঁচটি প্যানেল।

সেদিন গভীর রাতে ঘোষণা করা ফলাফলে দেখা যায়, ডাকসুতে মোট ২৫টি পদের মধ্যে জিএস-এজিএসসহ ২৩টি পদে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ।

বর্জনের মধ্যেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্যানেল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা নুরুল হক নূর ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়ী হন একই প্যানেলের আখতার হোসেন।

এই নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রঐক্য ও স্বতন্ত্র জোটসহ অধিকাংশ প্যানেল। নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূরও তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

এর মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী ডাকসুর পুনঃতফসিলের দাবিতে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশন শুরু করেন। অনশনে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ তদন্তের আশ্বাসে চার দিন পর অনশন ভাঙেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ বিষয়ে কিছু প্রার্থী ও প্যানেলের পক্ষ থেকে কতিপয় অভিযোগ উত্থাপিত হলে, তা তদন্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রদানের জন্য উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাত সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগ তদন্তের এই সিদ্ধান্ত নিতে ‘অনেকটা দেরি করেছে’ বলে মন্তব্য করছেন ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উম্মে হাবিবা বেনজীর।

ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বেনজীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি আমরা নির্বাচনের দিনই করেছিলাম। সেই ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটি গঠন এবং এর প্রতিবেদন আসার আগেই নির্বাচনের ফল ঘোষণা করে অভিষেকের আয়োজন চলছে।

“এখন এর প্রতিবেদন ন্যায়নিষ্ঠ হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে। কমিটিতে যাদের নাম দেখা যাচ্ছে তারা কতটুকু নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবেন সেটাও একটা আশঙ্কার বিষয়।”