সড়ক নিরাপত্তা: নদ্দায় আন্দোলনকারীদের একাংশের মানববন্ধন

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মেয়রের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করলেও আরেকটি অংশ রাজধানীর নদ্দায় প্রগতি সরণিতে মানববন্ধন করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2019, 07:16 AM
Updated : 21 March 2019, 01:58 PM

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), ইউনাইটেড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (ইউআইইউ) এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে  প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরা গেইটে জড়ো হলে পুলিশ তাদের চলে যেতে অনুরোধ করে।

পুলিশের সঙ্গে কিছু সময় আলোচনার পর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে রাস্তার পাশে মানববন্ধনে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর জন্য দায়ী বাসচালকের মৃত্যুদণ্ড এবং সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।   

ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের এডিসি আহমেদ হুমায়ূন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করছে। যান চালাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমরাও কোনো বাধা দিচ্ছি না।”

বিকাল ৩টায় কর্মসূচি শেষে করে বিইউপির শিক্ষার্থী ফামিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “নিরাপদ সড়কের আট দফা দাবিতে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করেছি। মেয়র সাত দিন সময় নিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না সেটা আমরা দেখব। 

“শুক্র ও শনিবারের পর রোববার থেকে আমরা আবারও মানববন্ধন করব। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে আমরা ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করব।” 

আগের দিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করে এসে যারা কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন, তাদের কাউকে বৃহস্পতিবারের মানববন্ধনে দেখা যায়নি।  

বসুন্ধরা গেইটের ওই জায়গাতেই গত মঙ্গলবার সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বিইউপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবরার।

ওই দুর্ঘটনার পরপরই সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিইউপির শিক্ষার্থীরা। বুধবার সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ সড়কের দাবিতে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভে যোগ দেয়। 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বুধবার বসুন্ধরা গেইটে গিয়ে সেখানে আবরারের নামে একটি ফুটব্রিজের ভিত্তিফলকও উন্মোচন করেন, যা ছিল আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি।

সড়ক দুর্ঘটনায় আবরারের মৃত্যুকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে মেয়র আতিকুল শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। 

পরে শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মেয়রের সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠকে বসে। পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও বৈঠকে অংশ নেন। 

বৈঠক শেষে বিউইপির আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি ফয়সাল এনায়েত ব্রিফিংয়ে বলেন, আবরার নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফুটব্রিজ, স্পিডব্রেকার নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে এক মাসের মধ্যে তার দৃশ্যমাণ অগ্রগতি সাধন এবং সুপ্রভাত পরিবহনকে আর কখনও রুট পারমিট না দেওয়ার দাবি পূরণ করার প্রতিশ্রুতি তারা মেয়রের কাছ থেকে পেয়েছেন। এর ভিত্তিতে তারা অগ্রগতি দেখার জন্য সাত দিন সময় দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করছেন।

কিন্তু তারা বসুন্ধরা গেইটে ফিরে গিয়ে ওই সিদ্ধান্ত জানালে বিক্ষোভকারীদের একাংশ তাতে আপত্তি তুলে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেয়।

পরে বৃহস্পতিবার সকালে আবার বসুন্ধরা গেইটে আসার ঘোষণা দিয়ে রাস্তা ছেড়ে যান আন্দোলনকারীরা।