উপজেলা ভোট: ১ ওসি প্রত্যাহার, ৪ জনকে অব্যাহতি

পক্ষপাতের অভিযোগ ওঠায় দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটের দায়িত্ব হারালেন পাঁচটি থানার ওসি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2019, 03:57 PM
Updated : 18 March 2019, 03:40 AM

পাঁচ ধাপের এই নির্বাচনে সোমবার দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।

তার একদিন আগে পুলিশের একজন ওসিকে প্রত্যাহার এবং চারজনকে ভোটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।

ইসির যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান সাংবাদিকদের বলেন, “অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।”

এছাড়া দিনাজপুরের বীরগঞ্জ, বগুড়ার শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা ও বান্দরবানের আলীকদম থানার ওসিকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তাদের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসির যুগ্ম সচিব।

ইসির সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, দ্বিতীয় ধাপে ১৫ জেলার ১১৬ উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।

ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ ধাপে উপজেলা নির্বাচনে পার্বত্য এলাকায় সেনা থাকছে। ভোটের কারণে পর্যটন এলাকাগুলোয় পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সকাল সাড়ে ১০টায় ভোটারশূন্য ছিল কাকনহাট কলেজ কেন্দ্র। (ফাইল ছবি)

এবার উপজেলার ভোট হচ্ছে পাঁচ ধাপে। এর মধ্যে প্রথম ধাপের ভোট শেষ হয়েছে ১০ মার্চ। নানা অনিয়মের কারণে সেদিন ২৮টি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করা হয়; গ্রেপ্তার করা হয় অন্তত তিনজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে। তারপরও প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণকে ‘মোটামুটি শান্তিপূর্ণ’ বলেছে নির্বাচন কমিশন।

দলীয় প্রতীকে এই প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হলেও বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলের বর্জনের কারণে প্রথম দফার ভোটে লড়াইয়ের আমেজ দেখা যায়নি। সেদিন ভোট পড়ে ৪৩ শতাংশ।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় প্রথম ধাপে ২৮ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত হলেন ৪৮ জন।

ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের উপজেলাগুলোতে হবে ভোট। পঞ্চম ও শেষ ধাপের ভোট হবে ১৮ জুন।

ভোট তথ্য

>> ১৫ জেলার ১১৬টি উপজেলা ভোট।

>> বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৪৮ জন। চেয়ারম্যান ২৩, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ১২।

>> ভোটের লড়াইয়ে চেয়ারম্যান পদে ৩৭৭, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৪৮ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন।

>> ১১৬ উপজেলায় ৭ হাজার ৩৯টি কেন্দ্রে ভোটার ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৬ জন।

>> নিয়মিত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে খাগড়াছড়ির ৮ উপজেলা, বান্দরবানের ৭ উপজেলা ও রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় থাকবে সেনা।

>> ১২৯ উপজেলায় ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তী ধাপে স্থানান্তর, আদালতের আদেশে স্থগিত ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ১৩ উপজেলা বাদ পড়েছে।

>> বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে ৬ উপজেলায় (পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নওগাঁ সদর, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও রাউজান এবং নোয়াখালীর হাতিয়া) ভোটের দরকার পড়ছে না। এছাড়া ৬ উপজেলার ভোট পিছিয়েছে এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।

সোমবার যেসব উপজেলায় ভোট

রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও, রংপুর, গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলার সব উপজেলা, রাজশাহী বিভাগের বগুড়া, সদর উপজেলা ছাড়া নওগাঁর সব উপজেলা ও পাবনা জেলার সদর ছাড়া সব উপজেলায় ভোট হবে সোমবার।

সিলেট বিভাগের সিলেট ও মৌলভীবাজারের সব উপজেলা এবং ফরিদপুর জেলার সদর ছাড়া সব উপজেলায় এদিন ভোট হবে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তর চট্টগ্রামের সব উপজেলা (সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী), রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার সব উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় এই ধাপে ভোট হবে।