আপাতত দেশে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ আনার অনুমতি দিচ্ছে না বেবিচক

পাঁচ মাসের মধ্যে বোয়িংয়ের তৈরি দুটি ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও (বেবিচক) এ বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2019, 06:27 AM
Updated : 13 March 2019, 06:28 AM

বোয়িংয়ের সর্বাধুনিক ওই উড়োজাহাজ এ মুহূর্তে বাংলাদেশের কোনো বিমান পরিবহন সংস্থার বহরে না থাকলেও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সম্প্রতি ভাড়ায় একটি ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ এনে ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য চুক্তি করেছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, লায়ন এয়ার ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের দুটি নতুন বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো এয়ারলাইন্সগুলোকে ওই মডেলের উড়োজাহাজ কেনা বা লিজ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।

বেবিচকের পরিচালক চৌধুরী এম জিয়াউল কবির বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরবর্তী ঘোষণার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের কোনো এয়ারক্রাফট আনা যাবে না।”

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দেশে প্রথমবারের মত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ আনার ঘোষণা দেয়।

সেদিন জানানো হয়, লিজিং কোম্পানি এয়ারক্যাপের মাধ্যমে ১২ বছরের জন্য একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ উড়োজাহাজ ভাড়া আনছে ইউএস-বাংলা। তবে সেজন্য কোনো সময়সীমা তারা তখন জানায়নি। 

ইউএস-বাংলার জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এখনই তারা ওই চুক্তি বাতিলের কথা ভাবছেন না।

“এরই মধ্যে দুটো ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো তদন্ত হচ্ছে। আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সেটি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।”

কামরুল বলেন, তারা এয়ারক্যাপের সঙ্গে একটি এয়ারক্রাফট আনার জন্য চুক্তি সই করেছেন। বিভিন্ন দেশের অন্তত পাঁচ হাজার ম্যাক্সের অর্ডার রয়েছে বোয়িংয়ের হাতে। সেগুলো আপাতত স্থগিত করা হলেও বাতিল করা হয়নি।

মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের সফল ৭৩৭ সিরিজের সর্বশেষ মডেলটি হচ্ছে ম্যাক্স। বাণিজ্যিকভাবে এ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট চালানো শুরু হয় ২০১৭ সালে।

দুই বছর পর না হতেই প্রথমবারের মত বড় ধরনের দুর্ঘটনায় পড়ে এই উড়োজাহাজ। গত ২৯ অক্টোবর জাকার্তার কাছে জাভা সাগরে লায়ন এয়ারের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিধ্বস্ত হলে ১৮৯ আরোহীর সবাই নিহত হন।

এর পাঁচ মাসের মাথায় রোববার ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ জন আরোহীর সবাই নিহত হলে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়।

দুই দুর্ঘটনার কারণ একই কি না- তা এখনও জানা যায়নি। তবে দুটি উড়োজাহাজই ছিল নতুন, আর সেগুলো বিধ্বস্ত হয় উড্ডয়নের অল্প সময়ের মধ্যে।

এই পরিস্থিতিতে চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ অধিকাংশ দেশ এবং অধিকাংশ এয়ারলাইন্স বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ না ওড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।