পুরান ঢাকার কেমিকেল গুদাম সরাতে সবাই রাজি: সালমান

চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের কারখানা ও গুদাম সরাতে সবাই একমত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2019, 02:38 PM
Updated : 6 March 2019, 02:38 PM

বুধবার নগর ভবনে আয়োজিত ‘পুরনো ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা, সংকট ও সম্ভাবনা: করণীয় ও বর্জনীয়’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় তিনি বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর যে পদক্ষেপগুলো নেওয়ার কথা ছিল তা নেওয়া হয়নি।

রাসায়নিক কারখানা এবং গুদাম স্থানান্তরে নতুন জায়গা নির্ধারণে জোর দিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, “একটা বিষয় ঠিক যে আমাদের এখান থেকে সরতে হবে। এটা নিয়ে কিন্তু দ্বিমত নাই। সবাই বলছে যে আমরা সরতে রাজি আছি।

“কিন্তু আমরা যাব কোথায়? আপনাকে তো যাওয়ার জায়গা দিতে হবে। আরেকটা বিষয় হলো জায়গার ব্যবস্থা করার আগ পর্যন্ত আমাদের সময় দিতে হবে। আর সেই জায়গাটা ঢাকার আশপাশে হতে হবে।”

নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পরই পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের কারখানা ও গুদামগুলো সরিয়ে নিলে চুড়িহাট্টার ঘটনা এড়ানো যেত, বলেন  বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান।

“আমরা বলেছিলাম করব, যেটা সরকারও বলেছিল করবে। আপনারাও বলেছিলেন করবেন। যে কোনো কারণে সেটা হয় নাই। আমি মনে করি সেইটাই হলো আমাদের সব থেকে বড় ব্যর্থতা।”

এই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“…সেই ভুল থেকে আমাদের শিখতে হবে। যা যা আমাদের করার কথা ছিল সেটা আমরা করি নাই। এইবার যেন আমরা সেই ভুলটা না করি। এইবার যে যে প্রকল্প নেওয়া দরকার তা যেন আমরা নিই।”

দাহ্য রাসায়নিকের তালিকা করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন,  “এখন অগ্নিকাণ্ডের জন্য ক্ষতিকর ২৯টি দাহ্য পদার্থের তালিকা করা হয়েছে। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আরও বাড়ানো হবে। কিন্তু এটি ৩২ এর বাইরে যাবে না।” 

সভায় মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, নগর কর্তৃপক্ষ এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে দিতে পারে না।

“পুরান ঢাকার দুর্ঘটনা আমি দেখেছি। এই বিভৎস চিত্র নগর কর্তৃপক্ষ মেনে নিতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী মেনে নিতে পারেননি।

“আমরা চাই এই টাস্কফোর্স ঝুঁকি নিরসন করে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেবে। টাস্কফোর্স যখন গঠন করেছি তখন তার কার্যপরিধি নিশ্চিত করা হয়েছে।”

তালিকায় থাকা ২৯টি দাহ্য পদার্থের বাইরেও অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ রয়েছে বলে জানান মেয়র।

তিনি বলেন, এসব ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ অপসারণ অভিযান অব্যাহত থাকবে।  

রাসায়নিকের কারখানা ও গুদাম স্থানান্তরে নতুন জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন।

তিনি বলেন, তাদের জন্য যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে তারা সেখানে যাবে।

তবে কোনোভাবেই কোনোও ব্যবসায়ীকে হয়রানি বা দাহ্য পদার্থ না রাখলে তার  বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে না বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।