‘অর্থ জোগাড়ে ডাকাতিতে’ হুজি সদস্য

ঢাকায় একটি ডাকাত দলকে গ্রেপ্তারের পর তার মধ্যে দুই জঙ্গিকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2019, 03:22 PM
Updated : 4 March 2019, 03:30 PM

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. উজ্জ্বলকে কারাগার থেকে বের করতে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য টাকা জোগাড় করতে ডাকাত দলের সঙ্গে যুক্ত হয় তারা।

হাফিজ ওরফে খালিদ এবং মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লা নামে এই দুজন নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর (হুজি) সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার রাতে ঢাকার ধোলাইপাড় থেকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার দুই হুজি সদস্যসহ ১৪ জনকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ১২ জন পেশাদার ডাকাত বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারা হলেন মোফাজ্জল হোসেন ওরফে বড় ভাই ওরফে দাদা ওরফে দাদু, জহির উদ্দিন ভূইয়া ওরফে চৌধুরী, আতিকুর রহমান, মনিরুজ্জামান ওরফে নয়ন, লাড্ডু মোল্লা, কাইয়ুম শিকদার, আলাউদ্দিন শেখ, মুন্সি খসরুজ্জামান ওরফে মেজর, জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সুব্রত দাস, মিন্টু কর্মকার ও অলিউল্লাহ হাওলাদার ওরফে অলি। বলা হচ্ছে, মোফাজ্জল এই দলের সর্দার।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, ধোলাইপাড় মোড় সংলগ্ন এশিয়া জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে চারটি পিস্তল, ৩৩ রাউন্ড গুলি, একটি চাপাতি, কালো কাপড়ের মুখোশসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহার করা যায় এমন বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছে একটি পিকআপও পাওয়া যায়।

“গ্রেপ্তারের পর তারা বলেছে, ধোলাইপাড় পূবালী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডদেরকে জিম্মি করে ডাকাতি করার জন্য জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল।”

ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় রোববার রাতে ব্যাংক ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক ডাকাত দলের ১২ সদস্যকে সোমবার মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়।

তাদের দেওয়া তথ্যে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল রামপুরায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হুজির দুই সদস্য খালিদ ও বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করে বলে পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন জানান।

তিনি বলেন, সেখানে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি রাইফেল, একটি পাইপগান, গানপাউডার, ককটেল এবং নগদ প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা পাওয়া যায়।

উপকমিশনার বাতেন বলেন, “পেশাদার ডাকাত দলের সদস্যরা জানিয়েছে, হুজির দুই সদস্য তাদের অস্ত্রগুলো দিয়েছে এবং ডাকাতির পর প্রাপ্ত অর্থের ৩০ ভাগ তাদের (হুজির সদস্যদের) দিতে হত।”

হুজির দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদেও একই তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এরা হরকাতুল জিহাদকে শক্তিশালী করার জন্য মাঠে কাজ করছে। ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উজ্জ্বলের সাথে কারাগারে তাদের কথা হয়েছে। উজ্জ্বল তাদের বলেছে যে কোনো উপায়ে তাকে যেন কারাগার থেকে বের করে।

“আইনি প্রক্রিয়ায় না হলে অন্য প্রক্রিয়ায় বের করতে হলেও যেন তারা সেটা করে এবং সেজন্য টাকা জোগাড় করতে যা যা করা প্রয়োজন, সেটাও তাদের করতে উজ্জ্বলের নির্দেশনা ছিল।”