রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মঙ্গলবার ‘কনভেনশন অন এনআরবি ইঞ্জিনিয়ারস’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আজকে আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সেখানে আমরা আশা করছি যারা বিদেশি তারা তো বিনিয়োগ করবেনই, আমাদের প্রবাসী যারা তারাও বিনিয়োগ করতে পারেন। প্রবাসীদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি।”
প্রবাসীদের সুবিধার জন্য তিনটা ব্যাংক করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “রপ্তানির ক্ষেত্রে একটা জিনিস চিন্তা করতে হবে। গার্মেন্টসে আমরা দ্বিতীয় এটা ঠিক। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে, একটা পণ্যের ওপর নির্ভর করে একটা দেশ চলতে পারে না। আমাদের রপ্তানি পণ্যকে বহুমূখীকরণ করতে হবে।”
পাট, সমুদ্র থেকে মৎস আহরণ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করা এবং আইসিটি পণ্য রপ্তানি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্বের ৩০টি দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা অংশ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষতা তৈরির জন্য যেসব প্রবাসী বিদেশে থেকে যাচ্ছেন সেটাকে তিনি মেধা পাচার বা ‘ব্রেইন ড্রেইন’ বলে মনে করেন না। বরং ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অনেকে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা কথা সবসময় বলা হয় যে, ব্রেইন ড্রেইন। আমি কিন্তু কখনো এ কথাটা মনে করি না। অনেকে বিদেশে থেকে যান, অনাবাসী হয়ে যান। কিন্তু সেখানেও কিন্তু একটা সম্ভাবনা থাকে, যে অভিজ্ঞতা আপনারা সঞ্চয় করেন। আমরা যদি বিশ্বকে না দেখি, তাহলে আমরা জানব কি করে যে, বিশ্বের কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে, কীভাবে উন্নয়ন হচ্ছে।
“সুতরাং সেটা জানা এবং জ্ঞান অর্জনের একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। সেই জ্ঞান অর্জনের যে সুযোগটা আপনারা অর্জন করেছেন। আজকে আপনারা বাংলাদেশের উন্নয়নে শরীক হতে চান, কাজে লাগাতে চান- আমি আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে এই উদ্যোগটা আপনারা নিয়েছেন। আমি ব্রেইন ড্রেইন বলিনি কখনও। আমি বলেছি বরং সেখানে গিয়ে আরও জ্ঞান অর্জন করা হয়।”
“বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কোনো কাজ তারা করেনি। যদি করত তাহলে বাংলাদেশ বহু আগেই উন্নত হত। আর সেটা করেনি বলেই আমরা পিছিয়ে ছিলাম।”
প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে ছয় দফা ও মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রামে তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার কথা উল্লেখ করেন।
দেশের উন্নয়নে প্রত্যেকটা পদক্ষেপ সুপরিকল্পিতভাবে নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সর্বক্ষেত্রে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি বলে আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতি এবং প্রবৃদ্ধির দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে।”
সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার কমানো এবং সড়ক অবকাঠামোসহ বিভিন্ন বড় বড় ভৌত অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন তিনি।