দাবি আদায় না হলেও নির্বাচনে ‘যেতে প্রস্তুত’ ছাত্রদল

ডাকসুর ভোট তিন মাস পেছানোসহ সাত দফা দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূরণ না করলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্রদল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2019, 12:45 PM
Updated : 23 Feb 2019, 06:00 PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার শনিবার মধুর ক্যান্টিনে এসে আসন্ন ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের ভাবনার কথা সাংবাদিকদের জানান।

প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও তিনি বলেছেন, তাদের মূল লক্ষ্য হল দাবি আদায় করেই নির্বাচনে অংশ নেওয়া। 

তিন দশক পর আদালতের আদেশে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ১১ মার্চ ভোটগ্রহণের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

তফসিল ঘোষণার আগে থেকে ছাত্রদল ভোটকেন্দ্র হলে স্থাপন না করা সহ সাতটি দাবি তোলে। তফসিল ঘোষণার পর তারা ‘স্থিতিশীল সহাবস্থানের’ জন্য ভোট পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে।

দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছাত্রদলের নেতারা নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার পর বিনা বাধায় ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারছেন।

শনিবার দুপুরে জনা বিশেক নেতাকর্মী নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে যান বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী। 

মেহেদী বলেন, “আমরা প্রশাসনকে বারবার বলেছি, তড়িঘড়ি করে নির্বাচন হলে সেটা ফলপ্রসূ হবে না। আমাদের দাবির মধ্যেও আছে যৌক্তিক সময় পর্যন্ত নির্বাচন পেছানোর।

“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের দাবি না মানে সেক্ষেত্রেও আমরা যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারি, সেই প্রস্তুতিও আমাদের আছে। কিন্তু আমাদের মূল টার্গেট হল দাবি আদায় করেই আমরা নির্বাচনে যাব।”

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ৩০ বছরের বয়সসীমা বেঁধে দিলেও নিজেদের মনোনয়ন ফর্ম বিক্রির ক্ষেত্রে তা মানছে না ছাত্রদল। 

মেহেদী বলেন, “আমরা আমাদের দাবিতে বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত যে কোনো শিক্ষার্থীই যেন নির্বাচনে যেতে পারে, এখানে বয়স কোনো ফ্যাক্টর হতে পারে না। আমাদের দাবির অগ্রগতি হবে ধরে নিয়েই আমরা ফর্ম বিতরণ করছি। ৩০ বছরের বেশি কেউ যদি ফর্ম নিতে চায়, তাহলে পারবে। আমরা তো এই বাধা মানি না।”

প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া বয়সসীমা ৩০ এর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রদল নেতা বলেন, "দেখেন ডাকসুটা একটা গ্ল্যামার। ছাত্রদল আরেকটা গ্ল্যামার। ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কিন্তু পরীক্ষিত। তাদের বাদ দেওয়ার জন্যই বয়স ৩০ করা হয়েছে।”

ছাত্রদলের প্যানেল কবে ঘোষণা করা হবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। ছাত্রদল একটি সুসংগঠিত সংগঠন। যে কোনো সময় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো সামর্থ্য ছাত্রদলের আছে।"

মনোনয়নের ক্ষেত্রে কাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে মেহেদী বলেন, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটিতে ৫০০ প্লাস নেতাকর্মী আছে। এর মধ্যে ৪৭০ প্লাস হলো ৩০ (বয়স) এর ভেতরে এবং রানিং (নিয়মিত শিক্ষার্থী)। কাজেই আমাদের তো আসলে কর্মীর অভাব নাই।"

ছাত্রদলের ফরম বিক্রি উদ্বোধন

ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জন্য মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্র।

শনিবার সকাল ১১টায় নয়া পল্টনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ও রাকসুর সাবেক ভিপি রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, “আগামী ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াইয়ে লিপ্ত ছাত্রদলকেই সমর্থন দেবে। এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।”

ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ছাড়াও এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ওমর ফারুক।