শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ এলাকায় নমুনা সংগ্রহ শুরু হয় বলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার জানান।
সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের সহকারী অ্যানালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন জানান, শনাক্ত করা যায়নি এরকম ১৫টি লাশের দাবি নিয়ে ২০ জন তাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন।
“তাদের ডিএনএ নমুনা আমরা সংগ্রহ করেছি। আমরা আজ বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপর কেউ এলে তারা মালিবাগে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে গিয়ে নমুনা দিতে পারবেন।"
স্বজন পরিচয়ে যারা আসছেন, তাদের রক্তের পাশাপাশি গালের অভ্যন্তরের টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান নুসরাত।
আর যে ২১ জন লাশ শনাক্ত করা যায়নি, তাদের পেশি, দাঁত ও হাড়ের নমুনাও সংগ্রহ করছেন সিআইডির কর্মীরা।
বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা জানান, “যাদের চেনার উপায় নেই, তাদের পরিচয় শনাক্তের বিষয়টি এখন ডিএনএ স্যাম্পলের উপরই নির্ভর করছে। এ পরীক্ষার জন্য তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।”
নিখোঁজদের স্বজনরা যতদিন পর্যন্ত আসবেন, ততদিন পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহের এই কাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকায় কয়েকটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে নয় জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও ‘শঙ্কামুক্ত নয়’ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, নিহতদের মধ্যে ৪৫ জনের মরদেহ বৃহস্পতিবার রাতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার সকালে আরও একজনের লাশ নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ১৮টি লাশ অন্য চার মেডিকেল কলেজের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চারটি, কুর্মিটোলায় তিনটি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে পাঁচটি এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে পাঁচটি লাশ রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের পর দুদিন পেরিয়ে গেলেও ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী হাজী মোহাম্মদ ইসমাইলকে খুঁজে পাননি পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবারও তার খোঁজে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে এসেছিলেন তার ছেলে সোহরাব হোসেন।
অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দেখতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সকালে বার্ন ইউনিটে এলে তার কাছেও বাবাকে খুঁজে দেওয়ার আর্জি জানান সোহরাব।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তার বাবা মোহাম্মদ ইসমাইল চকবাজারে ব্যবসা করেন। বুধবার রাতে দোকান বন্ধ করে চুড়িহাট্টার পথ ধরে ফেরার সময় তিনি আগুনের কবলে পড়েন।
হাসান খান নামে আরেক বাবা তার ছেলে তানজিল হাসান রোহানের লাশের জন্য আহাজারি করছিলেন ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে। পরে সিআইডির কর্মীদের কাছে নিজের ডিএনএ নমুনা দিয়ে যান তিনি।
আরও খবর: