চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি: হাসপাতালের ৯ জনও ‘শঙ্কামুক্ত নয়’

চকবাজারে চুড়িহাট্টায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন নয়জনের কারও অবস্থাই ভালো নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2019, 06:57 AM
Updated : 22 Feb 2019, 06:57 AM

বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন শুক্রবার সকালে  সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের এখানে নয় জন রোগী আছে। তাদের একজনও আশঙ্কামুক্ত না। আমরা সবাইকে আইসিইউতে ট্রান্সফারের চিন্তা করছি। অলরেডি আমরা পাঁচজনকে ট্রান্সফার করেছি, আর চারজন আছে।”

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন চকবাজারের আগুনে দগ্ধদের কয়েকজন। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন

আইসিইউতে স্থান সংকটের কারণে তাদের এখনও স্থানান্তর করা যায়নি জানিয়ে সামন্ত লাল বলেন, “আইসিইউতে অনেক মুমূর্ষু রোগী আছে। যে কয়জনকে শিফট করা যাবে, তাদেরকে শিফট করে আমরা এই রোগীদের প্রাধান্য দেব।”

রোগীদের অবস্থা সম্পর্কে এই চিকিৎসক বলেন, বার্ন ইউনিটে প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় কিছুই বলা যায় না, কেউ ঝুঁকিমুক্ত না।

“কেমিকেল বার্ন কোনো সময় সুপারফিশিয়াল বার্ন হয় না, ডিপ বার্ন হয়। এই রোগীদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।

আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে সোহাগের (২৫) শরীরের ৬০ শতাংশ, রেজাউলের (২১) শরীরের ৫১ শতাংশ, জাকিরের (৩৫) শরীরের ৩৫ শতাংশ, মোজাফফরের (৩২) শরীরের ৩০ শতাংশ এবং আনোয়ারের (৫৫) শরীরের ২৮ শতাংশ পুড়েছে।

আর ওয়ার্ডে থাকা হেলালের (১৮) শরীরের ১৬ শতাংশ, সেলিমের (৪৪) শরীরের ১৪ শতাংশ, মাহমুদুলের (৫২) শরীরের ১৩ শতাংশ এবং সালাহউদ্দিনের (৪৫) শরীরের ১০ শতাংশ পুড়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান।

বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের কাছে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর পাঁচটি ভবনে আগুন ধরে যায়। ওই ভবন এবং আশপাশের দোকানে থাকা রাসায়নিক আর প্লাস্টিক-পারফিউমের গুদাম আগুনকে ভয়াবহ মাত্রা দেয়।

ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টার চেষ্টায় সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, কিন্তু ততক্ষণে চুড়িহাট্টা মোড় পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। ঘটনাস্থল থেকে ৬৭ জনের পোড়া লাশ মর্গে পাঠান উদ্ধারকর্মীরা, নয়জনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

নিহত ৬৭ জনের মধ্যে ৪৫ জনের মরদেহ শনাক্ত করার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।