চকবাজারের আগুনের সূত্রপাত কীভাবে

পুরান ঢাকার চকবাজারে নন্দ কুমার দত্ত রোড ও শেখ আজগর লেইন মিলিত হয়েছে চুড়িহাট্টা মোড়ে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকার প্রাচীন এই এলকায় এখন মৃত্যুপুরীর নীরবতা।

তাবারুল হকও জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2019, 04:21 PM
Updated : 21 Feb 2019, 08:47 PM

বুধবার রাতেও সেখানে আর দশটা দিনের মত স্বাভাবিক প্রাণচাঞ্চল্য ছিল। রাত পোহালেই একুশে ফেব্রুয়ারি, তারপর শুক্র আর শনিবার মিলিয়ে তিন দিনের ছুটি। সে কারণে ঢাকার পাইকারি পণ্যের বাজারের মধ্যে এ এলাকায় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড় ছিল তুলনামূলক বেশি।  

রাত ১০টার পর ঝাঁপ ফেলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন স্থানীয় দোকানিরা। শহরের বিভিন্ন এলাকা স্থানীয় বাসিন্দারাও ঘরে ফিরছিলেন। চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে চার রাস্তার মোড়ে তখন বেশ ভিড়।  

রিকশা, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার আর পিক-আপ ভ্যান মিলিয়ে শতাধিক যানবাহনের ভিড়ে যানজটের মত একটা অবস্থা ছিল সেখানে। এর মধ্যেই হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ, তারপর যেন নরক নেমে আসে চুড়িহাট্টা মোড়ে।   

রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণের পর প্রথমে রাস্তায় থাকা যানবাহনে এবং পরে আশপাশের পাঁচটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট রাতভর সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যায়।   

অগ্নিকাণ্ড শুরুর ১৫ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুরে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। ততক্ষণে বডিব্যাগে ভরে ৬৭টি লাশ পৌঁছায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। পোড়া লাশগুলোর মধ্যে ২৭টি এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

পুরান ঢাকার চকবাজারে চার তলা একটি বাড়িসহ কয়েকটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অর্ধ শতাধিক মানুষর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

ঠিক কীভাবে ওই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল, সে বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিভিন্ন রকম তথ্য এসেছে। আর ফায়ার সার্ভিস তদন্ত শেষ করার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে রাজি নয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বলেছেন, ওই মোড়ে ভিড়ের মধ্যে থাকা একটি পিকআপের গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরিত হলে অগ্নিকাণ্ডের শুরু হয়। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনও সাংবাদিকদের সামনে একই কথা বলেছেন।

আর ফায়ার সার্ভিস বলছে, পাইকারি পণ্যের বাজারের মধ্যে ওই ভবনগুলোর অধিকাংশ দোকানে প্লাস্টিক ও পারফিউমের গুদাম ছিল। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে, ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে বেশি।

বুধবার রাতে চুড়িহাট্টা মোড়ে ঠিক কী ঘটেছিল, স্থানীয় বাসিন্দা আর প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে তা জানার চেষ্টা করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

বুধবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের আগে এমনই ছিল চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়। হাজী আব্দুল ওয়াহেদের ছবি সম্বলিত চার তলার ভবনটিসহ এই মোড়ের মোট পাঁচটি দালান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আগুনে। গুগল স্ট্রিটভিউ।

বিস্ফোরণ

অগ্নিকাণ্ডের সময় চুড়িহাট্টা মোড় থেকে পূর্বদিকে ৩০-৩৫ গজ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন নন্দ কুমার দত্ত রোডের বাসিন্দা মো. আশিক উদ্দিন। হঠাৎ তিনি বিকট শব্দ পান, তারপর চার তলা হাজী ওয়াহেদ মঞ্জিল আর তার ডান পাশে রাজমহল হোটেলের সামনের রাস্তায় একটি পিকআপ ভ্যানকে উপর থেকে নিচে পড়তে দেখেন। 

“আমার মনে হয়, সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় ওই গাড়ি ছিটকে উপরে উঠে গিয়েছিল। আমি দেখেছি নামার সময়। এরপর মুহূর্তে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল।”

আশিক জানান, বিস্ফোরিত পিকআপ ভ্যানটির পাশেই রাজমহল হোটেলের চুলা ও কয়েকটা গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল। ওই হোটেলের সামনের অংশেও আগুন লেগে যায়।

কয়েক মিনিটের মধ্যে পাশের ওয়াহেদ মঞ্জিল এবং রাস্তার মোড়ে যানজটে আটকে থাকা প্রাইভেটকার, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন জ্বলতে শুরু করে।

এই পরিস্থিতিতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন আশিক। তবে চুড়িহাট্টা মোড়ে আরও অনেকের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই ওয়াসি উদ্দিন মাহিদও মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মী আতাউর রহমান বলেন, “ওই পিকআপ ভ্যানটি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাচ্ছিল। লোকজন বলছে, সামনে একটি অটোরিকশার সঙ্গে ধাক্কা লাগলে একটি সিলিন্ডার রাস্তায় পড়ে যায়। পাশের রাজমহল হোটেলের বাইরেও সিলিন্ডার রাখা ছিল। ওখানেই বিস্ফোরণ হয়, তারপর আগুন লেগে যায়। পরে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে প্লাস্টিক আর কেমিকেলের গোডাউনে।”

পুরান ঢাকার চকবাজারে চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত একজনের লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

ওয়াহেদ মঞ্জিল

সরেজমিনে দেখা যায়, চড়িহাট্টা মোড়ে দুটি পিকআপ ভ্যান পুড়ে কংকাল হয়ে পড়ে আছে। সেখানে পাশাপাশি দুটি প্রাইভেটকারের পোড়া কাঠামো, ৩৪-৩৫টি রিকশা এবং ২০-৩০টি মোটরসাইকেলের পোড়া ধাতব অংশ পাড়ে আছে।

মোড়ের দক্ষিণপাশে থাকা চারতলা হাজী ওয়াহেদ মঞ্জিল পুরোটাই পুড়ে গেছে আগুনে। পাশের ছয়তলা ভবনের নিচতলায় খাবার হোটেল রাজমহল। এ ভবনটিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সড়কের উল্টো দিকে আরেকটি চারতলা ভবন এবং ওয়াহেদ মঞ্জিলের পশ্চিম পাশের দোতলা আরেকটি ভবন আগুনে পুড়েছে। চড়িহাট্টা শাহী মসজিদ গেইটের সামনের অংশের টাইলস খসে পড়েছে। মোড়ের উত্তর-পশ্চিম অংশের ভবনের নিচে দুটি দোকানও পুড়ে গেছে।

রাস্তার মোড়ে পড়ে আছে অসংখ্য প্লাস্টিকের দানা, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য পারফিউমের পুড়ে যাওয়া বোতল ও অন্যান্য রাসায়নিকের পোড়া কৌটা।

স্থানীয়রা জানান, ওয়াহেদ মঞ্জিলের নিচতলায় টেলিকম, রিফ্রিজারেশ ওয়ার্ক, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন সামগ্রীর ১২-১৪টি দোকান ছিল। দোতলায় ছিল দেশি-বিদেশি পারফিউম ও প্লাস্টিকের কাঁচামালের কয়েকটি গোডাউন। ওপরের তিন ও চারতলায় ছিল বাসা বাড়ি।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যেসব লাশ উদ্ধার করেছেন, তার অনেকগুলো পাওয়া গেছে ওয়াহেদ মঞ্জিলের নিচতলা ও রাস্তায়। নিহতদের মধ্যে অনেকেই পথচারী ও বিভিন্ন দোকানে আসা ক্রেতা।

‘এইডা কেয়ামত, কেয়ামত’

চুড়িহাট্টা মসজিদের দোতলা থেকে আগুনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মো. মোফাজ্জল হোসেন (১৪)। ওই মসজিদের তিন ও পাঁচ তলা মিলিয়ে এই হাফিজিয়া মাদ্রাসা।

হবিগঞ্জের লাখাইয়ের ছেলে মোফাজ্জল বলেন, “হুজুরে পড়া শেষ করে আমি তখন চারতলা থেকে নিচে নামছিলাম, দোতলায় আসার পর বিকট শব্দে আঁতকে উঠি। নিচে তাকিয়ে দেখি আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, শত শত মানুষের দৌড়াদৌড়ি, ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে আগুন আশপাশের বিল্ডিংয়েও ছড়িয়ে গেল।”

এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসার হুজুর সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলেন। মোফাজ্জলসহ দশ জন ছাত্র মসজিদের গেইট দিয়ে বের হতে না পেরে ছাদে উঠে পেছনের আরেক ভবনের ছাদ হয়ে নিচে নেমে আসেন।

চুড়িহাট্টা মসজিদের মুয়াজ্জিন শাহ আলম বলেন, “আমরা সবাই ছাদে উঠে গিয়েছিলাম। উপর থেকে দেখছিলাম, কত মানুষ প্রাণভয়ে দৌড়াচ্ছে। অনেক মানুষ শরীরে আগুন নিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। আমার ছাত্ররাও সেসব দেখেছে। ওদের চোখেমুখে ভয় লেগে আছে।”

তিনি জানান, ১২ বছর ধরে তার ওই এলাকায় বসবাস। নিমতলির অগ্নিকাণ্ডের পর এলাকাবাসী ওই এলাকা থেকে কেমিকেল আর প্লাস্টিকের গোডাউনগুলো সরাতে বলেছে বার বার। সাধারণ মানুষের কথা কেউ শোনেনি।

ওয়ার্কস রোডের বাসিন্দা মিনু বেগম জানান, তিনি তখন ছিলেন নন্দ কুমার দত্ত রোডের জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টারে। আগুনে পোড়া বেশ কয়েকজনকে তিনি দৌড়ে যেতে দেখেন।

“আগুন লাগার পরে আমি এই দিক দিয়া দৌড়াইতাছিলাম। একজন পোড়া মানুষ আমার পাশ দিয়া গেল। অন্ধকার আছিল, তাও বুঝতে পারলাম তার গা থিকা চামড়া খইসা পড়তাছে। মুখ হাত দিয়া ঢাইকা অন্ধকারের ভিতরে দিয়া কই জানি দৌড়াইয়া গেল। আরও দুইজন মানুষরে আমি দেখলাম। তাগোও একই অবস্থা।

“আল্লাহ আমি কী দেখলাম! এইডা কেয়ামত, কেয়ামত!”

আতঙ্কের মুহূর্তগুলো

চুড়িহাট্টা মোড়ের উত্তর-পশ্চিম দিকের চারতলা ভবনের দোতলার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, “আমি তখন বাসায়, বিকট শব্দ শুনে বারান্দায় উঁকি দিয়ে রাস্তায় তাকিয়ে দেখি আগুন আর আগুন। এরপর আমার স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে সব কিছু ফেলে বাসা থেকে বের হয়ে যাই। আমাদের মত অসংখ্য মানুষ বাসা থেকে নেমে এভাবে জীবন বাঁচিয়েছে।”

চড়িহাট্টা মোড়ের যে বাসায় জাকির থাকেন, তার নিচতলায় তার মুদি দোকান ছিল। বাসা বাঁচলেও দোকানটি পুড়ে গেছে আগুনে।

অগ্নিকাণ্ডের সময় ওয়াহেদ মঞ্জিলের পশ্চিম পাশের দোতলার ভবনের নিচ তলায় ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবুল।

তিনি বলেন, “জোরে শব্দটা যখন হল, কিছু বুঝে উঠার আগেই সবাই ছোটোছুটি শুরু করে দিল। আমিও দক্ষিণ দিকে দৌড় দিলাম। ফার্মেসির শাটার ফেলে ভেতরে থাকা ৪-৫ জন বাঁচতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে শুনলাম তাদের সবার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।”

নন্দ কুমার দত্ত রোডের বাসিন্দা মো. আবদুল হালিম বলেন, “হোটেল রাজমহলের ওদিক থেকে প্রথমে আগুনের শিখা দেখলাম। তারপর রাস্তায় থাকা গাড়িতে আগুন ধরে গেল। পরে আগুন লাগলো বাসা বাড়িতে। আমরা কিছুটা দূরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই।”

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডিতে দুই সন্তান মাসুদ রানা ও মাহবুবুর রহমান রাজুকে হারিয়েছেন চাঁদনিঘাটের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহাবুল্লাহ, যিনি অগ্নিকাণ্ডের মিনিট কয়েক আগে নন্দ কুমার দত্ত রোড থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।

পুরান ঢাকার চকবাজারে চার তলা একটি বাড়িসহ কয়েকটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অর্ধ শতাধিক মানুষর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

তিনি বলেন, “এম আর টেলিকম নামে একটি মোবাইল এক্সেসরিজ ও ফ্লেক্সিলোডের দোকান ছিল আমার দুই ছেলের। রাজু বলেছিল, আব্বা আপনি বাড়ি যান। আমরা দোকান বন্ধ করে আসছি। আমি বিউটি মশলা রোড ধরে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ শুনি বিকট শব্দ। পরপর কয়েকটা বিস্ফোরণ। তারপর আগুন আর আগুন। আমি দৌড়ে যেতে চাইলাম ভেতরে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।”

নন্দকুমার দত্ত রোডের পাশে রহমতগঞ্জের ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী বুলবুল আহমেদ বলেন, বিরাট শব্দ শুনে তিনি ভেবেছিলেন বোধ হয় বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার ফেটেছে। পরে বাইরে গিয়ে দেখেন পুরো রাস্তা যেন জ্বলছে।

“পরিবারের সবাইরে লইয়া আমরাও নিচে নাইমা দৌড়াইছি। কতক্ষণ দৌঁড়াইছি মনে নাই। খালি মনে হইছে, আগুন পিছে পিছে আইতাছে।”

হাসপাতাল বন্ধ করে চলে যান কর্মীরা

নন্দ কুমার দত্ত রোডের জামাল সরদার কমিউনিটি সেন্টারে বুধবার রাতেও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। তবে অগ্নিকাণ্ডের বেশ কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ায় সেখানে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মী আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, “কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসা লোকজন আগেই বেরিয়ে গেছিল। ক্যাটারিং সার্ভিসের লোকজন যারা ছিল, তারাও সরে যায়। কমিউনিটি সেন্টারটি ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সেখানে কেউ হতাহত হয়নি।”

ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের একটি ভবনে নিরাপত্তাকর্মী মো. আমির হোসেন বলেন, “শব্দ পাওয়ার পর মনে হইল, বিল্ডিংগুলা সব ভাইঙ্গা পড়তাসে। যে যেমনে পারে দৌড়াইতাছে। কে কারে ধরব! সবাই জান লইয়া ছুটতাছিল।”

তিনি অভিযোগ করেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এলাকার একমাত্র হাসপাতাল চকবাজার হাসপাতালটি তালাবন্ধ ছিল।

“ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতাল বেশ দূরে। তবুও তারা তালা মাইরা সব চইলা গেছিল। যারা সামান্য আহত ছিল, তাদের ওই হাসপাতালে আনা যাইত।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ফ্রন্ট ডেস্কের একজন কর্মী বলেন, রাতে যারা ছিলেন আগুন লাগার পর আতঙ্কে তারা চলে গিয়েছিলেন। তাছাড়া বিদ্যুৎও ছিল না, আর তখন কোনো রোগীও ছিল না।