সরকারি জমি বিক্রি: ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে দুদক

প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ২৯৪ কোটি টাকার সরকারি জমি বেআইনিভাবে বিক্রির ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2019, 02:03 PM
Updated : 20 Feb 2019, 02:22 PM

বুধবার কমিশন থেকে অনুমোদন দেওয়া অভিযোগপত্রে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি (বিটিসিএল), ভূমি রেজিস্ট্রার ও সেটেলমেন্ট অফিসের আট কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

বিটিসিএলের নামে অধিগ্রহণ হওয়া ওই জমি অবৈধভাবে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কাছে বিক্রি করা হয় বলে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশানের কড়াইলে সরকারি ৬ দশমিক ৬৭ একর জমি বেআইনিভাবে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে দিতে ৯১ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- বিটিসিএলের সদস্য (প্রশাসন) মো. কামরুল আলম, পরিচালক (সংগঠন ও পদ্ধতি) আবু বকর মো. মমশাদ মাশরেকী, নোয়াখালী জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইয়াকুব, গুলশানের সাব-রেজিস্ট্রার (সাময়িক বরখাস্ত) মো. হেলাল উদ্দিন।

অন্য আসামিরা হলেন- সেটেলমেন্ট প্রেসের উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম ও আবুল কাশেম, কম্পোজিটর (পেশকার) মো. আলী আকবর খান, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার তপন চৌধুরী, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হোসাইন মোহাম্মদ মামুন, আমিন নিজামুল হায়দার চৌধুরী, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার মো. শহীদুল ইসলাম।

এছাড়া ঢাকা সদরের দলিল লেখক নাসিরউদ্দিন আহম্মদ, তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. ওসমান গনি, নাজমা বেগম, ফরিদপুরের শাহনাজ মামুন, লাক্সারী হাউজিং লিমিটেডের মালিক শহীদুজ্জামান চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. দিদারুল আলম, নরসিংদীর বাসিন্দা টি এম শামছুত তাবরিজ চৌধুরী, মাদারীপুরের সৈয়দ ছানোয়ার হোসেন, মোল্লা গাজী সালাউদ্দিন আহম্মেদ, মঞ্জুর আহম্মদ, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. বেলায়েত হোসেন লিটন মাঝি ও সৈয়দ জিয়াউদ্দিন হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।

২০১১ সালের ২ নভেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় করা মামলাটি পৃথকভাবে বিভিন্ন সময় দুদকের সাবেক উপ-পরিচালক আবদুল আজিজ ভূইয়া, উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূইয়া ও সৈয়দ আহমেদ তদন্ত করেন।

প্রণব কুমার জানান, শিগগিরই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন

এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রির মাধ্যমে এবি ব্যাংকের ১৩৩ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ না করে আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির দুই কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন ককমিশন (দুদক)।

বুধবার দুদকের এক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয় জানিয়ে প্রণব কুমার বলেন, শিগগিরই থানায় মামলাটি দায়ের করা হবে।

মামলায় আসামি করা হচ্ছে- ঋণ সুবিধা নেওয়া মেসার্স ইয়াসির ইন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোজাহের হোসেন এবং এবি ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নাজির উদ্দিন ও সাবেক সিনিয়র সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আজাদ হোসেন।

২০১৮ সালে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের করা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের হালিশহরে এবি ব্যাংকের পোর্ট কানেক্টিভিটি রোড শাখা থেকে ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ঋণ সুবিধা নেন মো. মোজাহের হোসেন।

পরবর্তিতে ২০১৩ সালে এবি ব্যাংকের ওই দুই কর্মকর্তার সুপারিশে ব্যাংকটির এই শাখা থেকে এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে প্রায় ৯৯ কোটি টাকার গম, চাল, ডাল, সার, বীজ, ক্যামিকেল ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রি করা হয়।

কিন্তু গ্রাহক মোজাহের ওই ঋণের সুদসহ ১৩৩ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৬১৭ টাকা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দুদকের সহকারী মোহাম্মদ সিরাজুল হক ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সহিদুর রহমান অভিযোগটি অনুসন্ধান করেন।