সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভায় একথা বলেন তিনি।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মতো নির্বাচন আয়োজনের আশা রেখে নূরুল হুদা বলেন, “ওই নির্বাচনে কিন্তু এগুলো (সংঘাত) নির্বাচনকেন্দ্রিক হয়েছে, তা বলব না, বেশির ভাগই ঘটেছে ভোটকেন্দ্রের বাইরে।
“তবুও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চিত্র রেকর্ডে রাখার মতো সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে হয়েছে। এটা আমি দাবি করতে পারি প্রকাশ্যে।”
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা বলছে, ইসি এক্ষেত্রে ছিল সহায়তার ভূমিকায়।
নির্বাচনে অনিয়ম ও সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
আগের নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করে সিইসি বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনে যেমন সহিংসতা ঘটেছিল, তা একাদশ নির্বাচনে ঘটেনি। যদিও কয়েকটি ঘটনা ৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। এইসব প্রাণহানির ঘটনায় ইসি মর্মাহত হয়েছে।”
নির্বাচন সুচারুরূপে করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “২০১৪ সালের পরিস্থিতি থেকে ২০১৮ সালে এই রকম বিরল সুষ্ঠু নির্বাচন উত্তরণে আপনারাই ভুমিকা রেখেছেন। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। একেবারে ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে, একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে একটা সুষ্ঠু অবস্থায় আপনারা নিয়ে এসেছেন।”
এর ধারাবাহিকতা আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন নূরুল হুদা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর-দক্ষিণের সম্প্রসারিত ৩৬ ওয়ার্ডে ভোট হবে। ১০ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা পরিষদের ভোট।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভায় ইসির চার কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার নির্বাচনকে গুরুত্ব দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, এই নির্বাচনের বিষয়ে কোনো রকম কোনো বিচ্যুতি হবে না- এমন ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনের সার্বিক আইনশূঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
“নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নির্বাচন যাতে অবাধ হয়, সেটা দেখতে হবে এবং নির্বাচন যাতে গ্রহণযোগ্য হয়, সেটার দিকে সবাইকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে হবে।”
কাউন্সিলর পদে বেশি প্রার্থী থাকায় তাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয়, সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
পোলিং এজেন্ট নিয়ে অভিযোগ নিয়ে নূরুল হুদা বলেন, “পোলিং এজেন্ট নিয়ে ৯৮ ভাগ অভিযোগের সত্যতা থাকে না। ভোটের দিন অনেক এজেন্ট প্রার্থীর অবস্থা ভালো না দেখলে কেন্দ্র ছেড়ে যান। অনেক দুর্বল প্রার্থী আবার এজেন্টই দিতে পারেন না। এমন বাস্তবতায় ভোট শেষে অনেকে তাদের এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন, যা অনেকাংশেই সত্য নয়।”