বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদককে ইমেইলে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি বলেন, “ওই বৈঠক সম্পর্কে নোয়াব কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি।
“বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা জানান, তারা কেউ এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সঙ্গে কথা বলেননি।”
“ডেইলি স্টার সম্পাদকের প্রতিবাদের জবাবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তাদের সংবাদের যথার্থতা নিয়ে যে দাবি করেছে, তা সঠিক নয়।”
বাংলাদেশের সংবাদপত্র মালিকদের অন্যতম সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) একটি প্রতিনিধি দল গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে দেখা করেন।
ওই বৈঠক নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ‘প্রতিবাদ’ জানিয়েছিলেন প্রতিনিধি দলের সদস্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
তার ওই ‘প্রতিবাদ’ নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নোয়াব সভাপতি ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বক্তব্য আসে।
তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত সংবাদের কোন অংশ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তা মতিউর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্ট নয়।
নোয়াব সভাপতি অস্বীকার করলেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে বৈঠকের দিনই একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এসেছিল।
এটি গোপনীয় কোনো বৈঠক নয় বলে স্বাভাবিকভাবে ধরে নিয়েও সংবাদ প্রকাশের আগে যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য বৈঠকে উপস্থিত একাধিকজনের সঙ্গে যোগাযাগ করে তার সত্যতা নিশ্চিত হয়েই সংবাদটি প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
মতিউর রহমান সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও ওই বৈঠক নিয়ে মাহফুজ আনাম সম্পাদিত ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও নোয়াবের ‘বিবৃতি’র কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
এমনকি একই দিন মতিউর রহমানের নিজের সম্পাদিত প্রথম আলো’য় প্রকাশিত সংবাদ ও ছবির উৎস হিসেবেও ‘বিজ্ঞপ্তি’ উল্লেখ করা হয়েছিল।
ওই বৈঠকে থাকা একটি সূত্রের দেওয়া তথ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরেকটি বিষয়ের উল্লেখ ছিল, যার ‘প্রতিবাদ’ জানিয়েছিলেন মাহফুজ আনাম।
ওই অংশে বলা হয়েছিল, ডেইল স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম আলোচনার এক পর্যায়ে বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার সালমান রহমানের কাছে তাদের ‘অতীতের মতপার্থক্য’র প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, তার প্রতি তাদের কোনো ‘বিদ্বেষ ছিল না’।
মাহফুজ আনাম দাবি করেন, ওই ধরনের কোনো কথা ওই বৈঠকে হয়নি, সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির মধ্যে তাদের আলোচনা সীমাবদ্ধ ছিল, বিশেষ করে নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা ও বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে।
তার প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তখনই বলেছিল, বৈঠক সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য নিশ্চিত হয়েই তা প্রকাশ করা হয়েছে।
মাহফুজ আনামের মতো মতিউর রহমানও দাবি করেছেন, বৈঠকে উপস্থিত সদস্যরা তাকে জানিয়েছেন যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সঙ্গে কেউ কোনো কথা বলেননি।
যিনি বা যারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকের আলোচনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে প্রকাশ করেছিলেন, তিনি বা তারা ওই ফোরামে তা স্বীকার করবেন না, এটাই স্বাভাবিক।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার সঙ্গে ওই বৈঠকে নোয়াবের প্রতিনিধি দলে যে সাতজন ছিলেন, তাদের দুজন বাদ দিয়ে অন্য সবাই নিজ নিজ সংবাদপত্রে সম্পাদকের পদও ধারণ করেন।
তাদেরও বিষয়টি জানা থাকার কথা যে সংবাদ মাধ্যমের চর্চিত নীতিমালা অনুযায়ী, এই ধরনের ক্ষেত্রে সূত্রের পরিচয় প্রকাশ না করার অধিকার সংবাদ মাধ্যমের রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলছে, এই ক্ষেত্রে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তার সূত্রের পরিচয় প্রকাশ করবে না।
তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রকাশিত সংবাদটি নিয়ে আগের অবস্থানেই শুধু থাকছে না, সেই অবস্থানে অনড় থাকতে যে কোনো কিছু মোকাবেলায়ও প্রস্তুত।