আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বাংলাদেশের ‘সম্পৃক্ততা বাড়ছে’

১৯৭১ সালের গণহত্যা, ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড এবং সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত- আইসিসির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বাড়ছে বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানিয়েছেন।

রিয়াজুল বাশার মিউনিখ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2019, 05:05 PM
Updated : 15 Feb 2019, 05:30 PM

শুক্রবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর ফাতোও বেনসুদার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূত আইসিসির বিভিন্ন কমিটির সদস্য। এটা একটা নতুন এলাকা, যেখানে খুব স্ট্রংলি আমরা ইনভলভড হচ্ছি। আগে খুব একটা ইনভলভমেন্ট আমাদের ছিল না।”

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে গত সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। আগামী মার্চের শুরুতেই তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে আইসিসি প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানান শহীদুল হক।

তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের ওখানে যে অ্যাট্রোসিটি ক্রাইম হয়েছে, সেটা স্টাবলিশ করার জন্য তারা এখন কেইস প্রসিডিং শুরু করেছে। তার আগে এটার এভিডেন্স কালেক্ট করতে হয়। সেটার স্টেপ হিসেবে তারা মার্চের প্রথমদিকে বাংলাদেশ ভিজিট করবেন।”

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “একইসঙ্গে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড এবং সেটার চলমান বিচারের কথাও বেনসুদাকে অবহিত করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। উনি বললেন, বিষয়টি তিনি জানেন। উনি খুব মর্মাহত এবং উনি মনে করেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত।

“উনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে ভিজিটের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উনি বললেন, ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম টু কাম অ্যান্ড ভিজিট। স্পিক টু জাজেস অ্যানি।”

“আমি অবশ্যই আসব,” বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীও বেনসুদাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “১৯৭১ সালের গণহত্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী তুললেন। তিনি (বেনসুদা) সহমর্মিতা জানালেন, আলোচনা করলেন।”

মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের মধ্যে এর আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ২০১৭ সালে নোবেলজয়ী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস-আইসিএএনের নির্বাহী পরিচালক বিয়াত্রিস ফিন।

শুক্রবার থেকে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ ছয় শতাধিক নীতি-নির্ধারক, চিন্তাবিদ, ব্যবসায়ীসহ সমাজের অগ্রাগামী শ্রেণির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে ৫৫তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন, যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নিয়েছেন।

সকালে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এবং ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন আয়োজিত ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-হু কেয়ার্স’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আইসিসি প্রসিকিউটরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানানোর সময় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমও উপস্থিত ছিলেন।