জগন্নাথ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবি কর্মীদের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখিয়েছে সরকার সমর্থক সংগঠনটির কয়েকশ নেতাকর্মী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2019, 04:53 PM
Updated : 13 Feb 2019, 04:53 PM

বুধবার সকাল থেকে তারা ক্যম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর দেড়টার দিকে স্থগিত কমিটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল ক্যাম্পাসে গেলে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে ফেলে তারা।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ এসে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তাদের সঙ্গীদের উদ্ধার করে।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর ক্যাম্পাসে আর দেখা যায়নি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে।

এ কয়েকদিন ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড না থাকলেও কর্মীরা নিজেদের মতো করে মিছিল করে আসছিল।

বুধবার সকালে হঠাৎ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের সমর্থকদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকলে দেখা দেয় উত্তেজনা।

তখন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের অনুসারীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের কার্যালয়ে অবস্থান নিলে তাদের ঘিরে ফেলে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। ওই ভবনের মূল ফটকে তালাও ঝুলিয়ে দিয়ে বাইরে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা।

আড়াই ঘণ্টা পর উদ্ধার পেয়ে সভাপতি তরিকুল ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল তাদের অনুসারীদের নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান।

রাসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, এটা সাংগঠনিক কোনো কাজ নয়।”

তালাবদ্ধ হয়ে আটকে থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।

স্থগিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাকিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ থাকলেও আজ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে শোডাউন দেন। আমরা যারা সাধারণ ছাত্রলীগ কর্মী আছি, তারা শুধু এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।”

সহ সভাপতি জামালউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে তরিকুল-রাসেল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য সব ধরনের অনৈতিক কাজ করছে। ভবিষ্যতে যেন তারা এমন কর্মকাণ্ড করতে না পারে, তাই আমরা সকলে একত্রিত হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করেছি।”

যুগ্ম সাধাণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিসাত বলেন, “এই কমিটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ কমিটি। মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তারা এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি।”

সহ সভাপতি আল আমিন শেখ বলেন, “এই কমিটি আসার পর থেকে ছাত্রলীগের নামে প্রায় প্রতিদিনই মারামারি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।”

তরিকুল ও রাসেলের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি ২০১৭ সালের অক্টোবের গঠিত হয়েছিল। এক বছর মেয়াদী এই কমিটির মেয়াদ চলে গেলেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি।

শাকিল, আল আমিন, রিসাতসহ বিক্ষোভকারী অবিলম্বে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে সংঘর্ষ তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  “জবি ছাত্রলীগের কমিটিরসকল ধরনের কার্যক্রম  স্থগিত রয়েছে এবং এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলমান। সেখানে কেউ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টি করলে তার দায়ভার তাদেরকেই নিতে হবে।”

বুধবারের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে জানানো হবে বলে জানান রিয়াদ।