নিজের ঘরে ইডেনের সাবেক অধ্যক্ষের লাশ, সন্দেহে গৃহকর্মী

ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় নিজের বাসা থেকে ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2019, 03:51 PM
Updated : 10 Feb 2019, 07:25 PM

তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বাসার দুই গৃহকর্মীকে সন্দেহ করছে তারা।

নিহত মাহফুজা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামার স্ত্রী। সত্তরের দশকের প্রথম দিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন গামা।

ঢাকা কলেজের সামনের বহুতল ভবন ‘সুকন্যা টাওয়ারের’ ১৫ ও ১৬ তলা মিলিয়ে একটি ‘ডুপ্লেক্স’ বাসায় থাকতেন গামা ও মাহফুজা।

মাহফুজা চৌধুরী পারভীন, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের

সেখান থেকেই রোববার সন্ধ্যার পর মাহফুজার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিউ মার্কেট থানার ওসি আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই বাসায় তিনজন গৃহকর্মী কাজ করতেন। তাদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব নারীটি বাসায় আছেন। বাকি দুইজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। এদের একজনের বয়স ৩০ এবং অন্যজনের বয়স ৩৫ বছরের মতো।

মাহফুজা চৌধুরীকে ১৬তলায় তার বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় জানিয়ে তিনি বলেন, “তার মুখে বালিশচাপা ছিল। বিছানায় ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

“ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমন্ত অবস্থায় মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর দুই গৃহপরিচারিকা আলমারি থেকে মূল্যবান কিছু নিয়ে গেছে।”

ঘটনার পর ওই বাসায় গিয়ে ইসমত কাদির গামাকে পাওয়া যায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ১৬ তলার দরজা দিয়ে বাসায় ঢুকতে গিয়ে দেখেন ভেতর থেকে বন্ধ। পরে নিচে নেমে অনেক ডাকাডাকির পর বৃদ্ধা গৃহকর্মী দরজা খুলে দেন।

দুই গৃহকর্মী স্ত্রীকে হত্যার পর টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ ইসমত কাদির গামার

বাসায় ঢুকে খাটের ওপর স্ত্রীকে শুয়ে থাকতে দেখেন জানিয়ে তিনি বলেন, “দেখি তার পা খাট থেকে ঝুলে আছে। পরে ঘটনা বুঝতে পারি।”

ঘরের আলমারি খোলা দেখতে পান জানিয়ে গামা বলেন, “আলমারি বেশ বড় অংকের টাকা ছিল সেগুলো নিয়ে গেছে। আর ওই গৃহকর্মীদের ছবি তোলা হয়েছিল একটি মোবাইলে, সেই মোবাইলটাও নিয়ে গেছে।”

বাসায় থাকা গৃহকর্মীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আছি, তুমি ঘুমাও- ওই দুইজনের এই কথায় তিনি ১৫ তলার একটি ঘরে ঘুমিয়েছিলেন।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের প্রতিবেদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব ওই বাসা ঘুরে জানান, ১৫ তলায় একটি ডাইনিং, একটি ড্রয়িং এবং একপাশে রান্নাঘর ও তার পাশে ছোট একটি কক্ষ রয়েছে। ওই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহকর্মী।

যে দুজন গৃহকর্মীকে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের মাস দুয়েক আগে কিশোরগঞ্জ ও শরীয়তপুর থেকে আনা হয়েছিল বলে জানান ইসমত কাদির গামা।

“এই বিল্ডিংয়ের এক মহিলার মাধ্যমে তাদের এনেছিল মাহফুজা।”

তাদের পরিচয় পাওয়া গেছে জানিয়ে ওসি আতিকুর বলেন, “তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।”

গামা-মাহফুজা দম্পতির দুই ছেলে। তাদের একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং অপরজন ব্যাংকার। তারা দুই ভাই আলাদা থাকেন।