বর্ণিল আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪০ বছর

বর্ণিল আয়োজনে প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর উদযাপন করেছে ‘আলোকিত মানুষ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে পথচলা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2019, 07:54 PM
Updated : 8 Feb 2019, 07:57 PM

শুক্রবার দিনব্যাপী নানা আয়োজনে শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের আড্ডা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখরিত ছিল রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবন।

সকালে ৯টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বর্ণিল শোভাযাত্রার  মধ্য দিয়ে বর্ষপূর্তির আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়।

এরপর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনে হয় প্রীতি সমাবেশ। সারা দেশ থেকে আসা প্রায় ১০ হাজার অতিথি এ আয়োজনে অংশ নেন।

১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা কলেজের বাংলার অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখায় ২০০৫ সালে অধ্যাপক সায়ীদকে একুশে পদকে দেয় সরকার।

সকালের আয়োজনে প্রীতি সমাবেশ ও আড্ডা-গল্পে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, অধ্যাপক রেহমান সোবহান, অধ্যাপক রওনক জাহান, অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক এবং টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, “আমার সঙ্গে কখনও কারও দেখা হলে কেউ যদি বলে সে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে জড়িত, তবে তার দিকে আমি বিশেষ দৃষ্টিতে তাকাই। আমি মনে করি, এখন যারা বই পড়ে না তাদের বলতে হবে, বই পড়, নইলে বড় হবে না।”

প্রযুক্তির খারাপ প্রভাব ঠেকাতে বইমুখী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রযুক্তির ব্যাড ইমপ্যাক্ট ঠেকানোর একমাত্র উপায় বই পড়া। আর স্যার (অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়িদ) সেটা অনেক আগেই সঠিকভাবে বুঝেছিলেন।”

অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে অধ্যাপক রেহমান সোবহান সাংবাদিকের বলেন, “ছোট থেকে এখন এটা একটা বড় গাছ। এটা আমার অনেক ভালো লাগে। এটা আমাদের পুরো দেশের জন্য ম্যাটার অব প্রাইড।”

৪০ বছর পূর্তির আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, “শুধু আমি একা নই, অনেক মানুষ তাদের শ্রম দিয়ে এর সঙ্গে থেকে কাজ করেছেন। চল্লিশ বছর গেল, কিন্তু এ আলোকিত করার কাজ চল্লিশ বছরের ব্যাপার না, হাজার হাজার বছরের বিষয়। সামনে আমাদের আনেক চ্যালেঞ্জ, এ নিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।”

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়।

কেন্দ্রের পাঠক সংখ্যা চলতি বছরই ৫০ লাখ ছাড়াবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এরপরও যদি কেউ বলে যে দেশে মানুষ বই পড়ে না- আমি এটার প্রতিবাদ করব। আজকেও যারা ফেইসবুক নিয়ে আছে, তাদের অধিকাংশের মধ্যে বড় কিছু নাই। খুবই সাধারণ। যাদের মধ্যে বড় কিছু আছে, তারা সবসময় বই চায়। কারণ তারা চিন্তা করতে চায়, গভীর জায়গাতে যেতে চায়।”