সোশাল মিডিয়ায় মন্তব্য: প্রাথমিকের শিক্ষকদের সতর্ক করল সরকার

ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সরকারে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মন্তব্য’ করা এবং নেতিবাচক কোনো পোস্ট শেয়ার করার বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সতর্ক করেছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2019, 09:30 AM
Updated : 6 Feb 2019, 09:30 AM

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত সোমবার ‘সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস/মন্তব্য প্রদান সংক্রান্ত’ ওই নির্দেশনা প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ইদানিং ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক স্ট্যাটাস/মন্তব্য ও বিভিন্ন অপপ্রচারমূলক তথ্য’ দেওয়া হচ্ছে, যা ২০১৬ সালের সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকার পরিপন্থি।

অধিদপ্তর বলছে, এ ধরনের ‘স্ট্যাটাস বা মন্তব্য’ প্রাথমিক শিক্ষা তথা সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, “ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা তথা সরকারে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আপপ্রচার ও বিভ্রান্তিমূলক স্ট্যাটাস/মন্তব্য ও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার জন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।”

প্রাথমিকের বিভাগীয় উপ-পরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশনাটি পাঠিয়ে সবাইকে বিষয়টি অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদকে  কয়েক দফা ফোন করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
 
অধিদপ্তরের আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ফেইসবুকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন বলে আমাদের কাছে খবর আসে। পরে কয়েকটি ঘটনা যাচাই করে সত্যতা পাওয়া যায়। এর ভিত্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নির্দেশনার আলোকে ওই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।”

সরকারের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর একটি নির্দেশনা জারি করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিজের ফেইসবুক পাতায় ‘একান্ত ব্যক্তিগত’ কোনো বিষয় প্রকাশ করতে পারবেন না।

পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় করার পাশাপাশি তাদের কর্মকাণ্ড নিয়মের মধ্যে আনতে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ আরেকটি নির্দেশিকা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

ওই নির্দেশনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা অংশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে, তা এই নির্দেশনার আওতায় আসবে না। তবে- ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় সরকারি কর্মচারীকে ‘দায়িত্বশীল নাগরিকসুলভ আচরণ ও অনুশাসন’ মেনে চলতে হবে।

“বাস্তব বা স্বাভাবিক অবস্থায় একজন সরকারি কর্মচারীর আচরণ, প্রকাশ, মিথস্ক্রিয়া সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহের প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে।

“কনটেন্ট ও ফ্রেন্ড সিলেকশনে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগিং বা রেফারেন্সিং পরিহার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন বা বিধি-বিধানের সম্মুখীন হবেন।”