৮৭ বছর বয়সী খ্যাতনামা এই শিল্পী শনিবার সন্ধ্যায় তার জীবনীগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সমাজের পশ্চাৎপদতা ও নিজের জীবনের চাওয়া-পাওয়ার কথাও তুলে ধরেছেন অকপটে।
মুর্তজা বশীর বলেন, “আমি একজন শল্য চিকিৎসকের মতো। মানুষের ছবিতে ডিসেক্ট (খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ) করেছি, দেখেছি। কিছু আঁকার পরে দেখেছি যে এটা রিপিটেশন হয়ে যাচ্ছে। তখনই আমি কিন্তু ছবি ছেড়ে দিয়েছি। আনন্দ যখন পাইনি ছেড়ে দিয়েছি।”
মিরাজুল ইসলামের লেখা ‘নার্সিসাসে প্রজাপতি’ নামের জীবনীটি প্রকাশ করেছে প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা।
চিত্রশিল্পী, লেখক, গবেষক মুর্তজা বশীরের জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া মৃত্যুর পর ‘বেঁচে থাকা’।
“আমি অতীতকে বিশ্বাস করি না, বর্তমানকেও বিশ্বাস করি না। আগামীকে আমি বিশ্বাস করি। আমি আগামীতে বেঁচে থাকব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশের সমাজ এখনও মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিতে পারার উপযোগী না হওয়ায় খেদ প্রকাশ করেছেন শিল্পী।
তিনি বলেন, “অনেক সময় আমি লিখেছি, অনেক সময় লিখিনি। লিখিনি এজন্য যে, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এটা, বিশেষ করে আমার মেয়ে দুটি যেখানে বিয়ে হয়েছে সে সংসারে অনেক কথা হবে যে, তোমার বাবা তো এ রকম।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ আরো অনেকে।
মর্তুজা বশীর সম্পর্কে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “তার মধ্যে ভালোবাসা যেমন আছে, তেমনি একটা নির্মমতাও আছে। তিনি এমন বড় একজন শিল্পী হয়ে মধ্যে মধ্যে অনেক লম্বা ছেদ টেনেছেন। তখন ছবি আঁকেননি।
“যিনি ছবি ভালোবাসেন তিনি ছবি না এঁকে থাকতে পারেন কী করে? অন্তত আমাদের মনে সেই প্রশ্ন সব সময়ই থাকবে।”